বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঙ্গ রাজ্যপাল বোসের মানহানির মামলায় নয়া মোড়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মানহানির মামলা ঠুকেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। সেই মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চে। এবার সেই সম্মানহানি প্রমাণিত হলে ১১ কোটি টাকা দেওয়ার আবেদন জানালেন রাজ্যপাল।
মমতার (Mamata Banerjee) কাছে বিরাট দাবি রাজ্যপালের
কেবল ১১ কোটিতেই শেষ নয়, পাশাপাশি কোর্ট ফি বাবদ ৫০ হাজার টাকাও দেওয়ার আবেদনও করা হয়েছে। মমতা-সহ চার জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় এমনই আবেদন জানিয়েছেন বোস। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীর দাবি, তার মক্কেলের কোনও মন্তব্যের জেরে রাজ্যপালের মানহানি হওয়ার কোনও জায়গাই নেই।
সিভি আনন্দ বোসের করা মানহানির মামলা বর্তমানে গড়িয়েছে ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে তার বাক স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলে ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
আগে এই মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, আগামী ১৪ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও মানহানিকর বা অসত্য মন্তব্য করা যাবে না।
এরপরই কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের অন্তর্বর্তী নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন মমতা। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে মমতার আইনজীবী তার মক্কেলের বাক স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। শুক্রবার এই মামলার শুনানি আছে।
প্রসঙ্গত, সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলার আগের শুনানিতে বিচারপতি বলেছিলেন, রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান। তাই ওনার বিরুদ্ধে যাতে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করা না হয় সেই বিষয়ে নজর রাখতে হবে। মমতা-সহ চার জনকে রাজ্যপাল সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য না করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: মমতার দেওয়া অনুদানে কেনা যাবেনা মূর্তি, দশকর্মার খরচাও নয়, শুধুই ব্যায় করতে হবে এই খাতে
সেই সময় হাইকোর্ট আরও জানায় আগামী ১৪ অগস্ট পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee), তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ, বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও রিয়াদ হোসেন এই চার জনকে (যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল) রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক কোনও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
গত মে মাসে রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন কলকাতা পুলিশের কাছে। সেই নিয়ে বহু জল ঘোলা হয়। এরই মধ্যে দিল্লিতে এক নৃত্যশিল্পীকে ধর্ষণেরও অভিযোগও সামনে আসে। এরপর বরানগর ও ভগবানগোলা উপনির্বাচনে জয়ী দুই তৃণমূল প্রার্থীর শপথকে ঘিরে যখন জটিলতা সৃষ্টি হলে এক প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সম্প্রতি মমতা দাবি করেছিলেন, “মহিলারা আমাকে জানিয়েছেন রাজভবনে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির কারণে তারা রাজভবনে যেতে ভয় পাচ্ছেন।” মমতা বলেন, ‘রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি চলছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে। আমার কাছে অভিযোগ করেছে ওরা।’ মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের জেরেই মামহানির মামলা করেন রাজ্যপাল।