বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের বিরোধীদের বরাবরের অভিযোগ তৃণমূল সরকারের আমল থেকেই তিলে তিলে ভেঙে পড়তে শুরু করেছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেই শিক্ষার্থীদের জন্য হামেশাই নিত্যনতুন সরকারি প্রকল্প উপহার দিচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
‘কন্যাশ্রী’তে অবাক করা পরিসংখ্যান দিলেন মমতা (Mamata Banerjee)
বাংলার সিংহাসন দখল করার পর থেকেই থেকেই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে তথা পড়ুয়াদের নানান সুযোগ সুবিধা করে দেওয়ার কথা ভেবেই একাধিক জনমোহিনি প্রকল্প শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের কথা। ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে রুখতে এবং তাদের পড়াশোনার মূল স্রোতে ফেরাতে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন রাজ্যের ৮৯ লক্ষ ছাত্রী।
আজ অর্থাৎ বুধবার ছাত্র সপ্তাহ পালনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) জানালেন তাঁর এই স্বপ্নের প্রকল্প নিয়ে এক বিরাট আশার কথা। মুখ্যমন্ত্রী চান কন্যাশ্রী এবার এক কোটির মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলুক। একই সাথে তিনি জানান রাজ্যের অন্যান্য প্রকল্পগুলিতে কতজন উপভোক্তা রয়েছেন। পরিসংখ্যান তুলে ধরে মমতা আজ জানালেন সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল পেয়েছেন রাজ্যের ১ কোটি ২৭ লক্ষ স্কুলপড়ুয়া। একইভাবে ৪ কোটি ১৫ লক্ষ উপভোক্তা পেয়েছেন ঐক্যশ্রীর সুবিধা।
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন রাজ্যের ১ কোটি ৩৯ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। এছাড়াও মেধাশ্রীর আয়তায় সরকারি অনুদান পেয়েছেন মোট ৬ লক্ষ ৬৮ হাজার ছাত্রছাত্রী। এছাড়াও রয়েছে স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপ পেয়েছেন রাজ্যের মোট ৩২ লক্ষ ৬০ হাজার শিক্ষার্থী। এছাড়াও উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে ঋণ পেয়েছেন ৮১ হাজার পড়ুয়া।
আরও পড়ুন: কলকাতা বইমেলায় স্টল পায়নি এপিডিআর! মামলা গড়াল হাইকোর্টে
মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধুমাত্র রাজ্যের শিক্ষা সংক্রান্ত প্রকল্পে সুবিধা পেয়েছেন প্রায় সাত কোটি পড়ুয়া। যা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য বলেই মতামত সরকারের। কিন্তু এই সুযোগে বিরোধীরাও সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের প্রাইমারি স্কুলগুলির বেহাল শিক্ষা পরিকাঠামো নিয়ে। প্রশ্ন তুলেছেন এত কিছু করেও কেন রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলির হতশ্রী অবস্থা কাটানো যাচ্ছে না? কেনই বা প্রশ্ন উঠছে কম ছাত্র-ছাত্রী থাকা একাধিক স্কুলের সংযুক্তিকরণের?
সরকারি প্রকল্পের সুবিধাপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের পরিসংখ্যান দেখে বিজেপি মুখপাত্র রাজর্ষি লাহিড়ী এদিন কটাক্ষের সুরেই প্রশ্ন করেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর এই পরিসংখ্যানের শাক দিয়ে দুর্নীতির মাছ ঢাকা যাবে না। আসলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় হলেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থার উদাহরণ। এসব সবাই জানে।’ একই সাথে এদিন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘তৃণমূল রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিলে তিলে শেষ হচ্ছে রাজ্যের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। বিগত ১০ বছরে সরকারি এবং সরকারপোষিত স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা কত কমেছে সেই পরিসংখ্যান দিন মুখ্যমন্ত্রী।’