বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাওড়ার (Howrah) ৫ হাজার শিল্পে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ। যার মাধ্যমে হাওড়ায় ১.৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান (Employment) হবে। এদিন হাওড়ার পাঁচলায় সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনটাই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। রাজ্য সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য শিল্পায়ন। তাই শিল্পে বিনিয়োগ টানতে অনেক ক্ষেত্র সরলীকরণ করেছে রাজ্য সরকার। অনু্ষ্ঠান মঞ্চ থেকে জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে জেলায় জেলায় সফর শুরু করেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় । এদিন সেইমতই হাওড়ার পাঁচলা সরকারি পরিষেবা প্রদান অনু্ষ্ঠানে উপস্থিত হন তৃণমূল সুপ্রিমো। বৃহস্পতিবার ১৫ টি জেলার ৯০০টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই রাজ্যে শিল্পের জোয়ার বয়ে আনতে হাওড়া জেলার হৃতগৌরব ফেরাতে শিল্পে নতুন করে বিনিয়োগের ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঠিক কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী? ভরা সভাপতি থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘হাওড়ায় শিল্পের জোয়ার এসেছে। হাওড়ার ৫ হাজার শিল্পে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। ৬৭ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া আরও শিল্পে ১১ হাজার ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব রূপায়নের পথে। তাতে দেড় লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হাওড়াতে আবার হবে। এই জেলায় ৩০ হাজারের বেশি এমএসএমই ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। ২৭টি ক্লাস্টার চালু হয়েছে। এক লক্ষ মানুষ এই ক্লাস্টারগুলিতে কাজ করে। হাওড়া জেলাকে এমএসএমই হাব হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গার্মেন্টস এবং টেক্সটাইল সেক্টরে জোর দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি সহায়তায় দুটি পার্ক হয়েছে। আর দুটি পার্ক হবে। তাতে ১ লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে।’
পাশাপাশি এদিন কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, শিক্ষার পাশাপাশি একাধিক ক্ষেত্রে নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ ৯০০–র বেশি প্রকল্পের শিলান্যাস হল। দুয়ারে সরকারে ৯ কোটি দরখাস্ত এসেছিল। তার মধ্যে ৭ কোটিরও বেশি দেওয়া হয়ে গিয়েছে। আজ ৬ লক্ষ মানুষের কাছে সরাসরি পৌঁছবে পরিষেবা। কোনও জেলা যাতে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হয় তার জন্য এই ব্যবস্থা। বনদফতরের জন্য ৩০০টি মোটরসাইকেল দেওয়া হয়েছে। বলাগড়ে পর্যটন কেন্দ্র করা হয়েছে। সাগর হাসপাতালে নতুন ক্যানসার ভবন চালু হল। ২০৮টি পানীয় জল প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছে যাতে ২০২৪ সালের মধ্যে সব বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য। বানতলায় চর্মশিল্পের নতুন ৩টি ইউনিটে ৩ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ফুরফুরা শরিফে ১০০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের নতুন নাম হয়েছে সবুজ সাথী। দেউচা পাঁচামি প্রকল্পে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।’
স্বভাবসিদ্ধভাবে এদিনের সভা থেকে কেন্দ্র সরকারকে কটাক্ষের সুরে বিঁধে তৃণমূল সর্বাধিয়নিকা বলেন, ‘১০০ দিনের কাজের ৭ হাজার কোটি টাকা আমরা পাই। কাজ করিয়ে নিয়ে টাকা দিচ্ছে না। আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে বলতে চাই গরিব মানুষের টাকা মারবেন না। একের পর এক প্রকল্পে টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গরিব লোক যাতে খাবার না পায় সেই কারণে ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার টাকা, শিক্ষার টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। রাজ্য থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন গোটা দেশে একটা কর জিএসটি। এখান থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমাদের ভাগ দিচ্ছে না। নির্বাচনের সয় এসে খালি দাঙ্গা করবে।’
তাঁর সংযোজন, “এলআইসি, ব্যাঙ্কের টাকা আদার ব্যাপারীর ঘরে চলে যাচ্ছে। আমার বাড়ি, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে না। গ্রামীণ রাস্তা তৈরির টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারে মুখে শুধু ভাষণ। কোনও কাজের কাজ নেই। যে টাকাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, সেই নিয়ে আগামী দিন আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। গ্রামীণ রাস্তার পিছনে খরচ করার জন্য আমরা ২ হাজার কোটি টাকার একটি পরিকল্পনা করছি।’