বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প আবাস যোজনা (Awas Yojana) নিয়ে শুরু থেকেই নজরে রয়েছে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের বিরোধ। রাজ্যের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে আবাস প্রকল্পে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যদিকে সুযোগ পেলেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে ফুঁসে ওঠে রাজ্যের শাসক দল।
মমতার (Mamata Banerjee) আবাস যোজনার টাকায় উপকৃত ২০ বিজেপি পরিবার
আবাস যোজনা সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অন্যদিকে রাজ্যের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বহুবার আসরে নেমেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও (Narendra Modi)। তবে এবার কথা মতোই রাজ্যবাসীকে নিজস্ব কোষাগার থেকে ঘর তৈরি করার জন্য টাকা দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
গত বছরের শেষেই যোগ্য আবেদন কারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে প্রথম কিস্তির টাকা। এরই মধ্যে এবার এই আবাস প্রকল্প নিয়ে ধরা পড়ল যেন এক উল্টো পুরাণের ছবি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Mamata Banerjee) দেওয়া আবাস প্রকল্পের টাকা পেল একই গ্রামের ২০টি বিজেপি পরিবার। শুধু তাই নয় এই বিজেপি কর্মীরা যাতে আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা পায় তার জন্য তদ্বির করেছিলেন খোদ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধীমান রায়।
বাংলার আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা ইতিমধ্যেই তাঁদের অ্যাকাউন্টে চলে এসেছে। জানা যাচ্ছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ১ ব্লকের আলিগ্রামের বিজেপি কর্মী সমর্থক পরিবারগুলিকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁদের কাছে সেই শুভেচ্ছাবার্তা পৌঁছে দিয়েছেন আউশগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস চট্টোপাধ্যায়।
আবাস প্রকল্পের টাকা নিয়ে মমতার সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের একাধিক অভিযোগ এনে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনিয়মও ধরা পড়েছে। তবে এদিক দিয়ে একেবারে বিপরীত ছবি ধরা পড়ল আলিগ্রামে। জানা যাচ্ছে এই আলিগ্রামে রয়েছে দুটি সংসদ। ওই দুটি সংসদ মিলে আবাস যোজনার চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছেন মোট ৫৪ জন। এই প্রাপকদের মধ্যে এমন ২০টি পরিবার রয়েছেন যারা সক্রিয়ভাবে বিজেপির সাথে যুক্ত। ওই একই গ্রামেই থাকেন তৃণমূলের তাপসবাবু।
আরও পড়ুন: ৫ বছর জেলবন্দি! অবশেষে মিলল জামিন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তোলপাড় দেশ
টাকা পাওয়ার পর বিজেপি কর্মী আকাশ গণ জানিয়েছেন, ‘আমরা সকলেই সরকারি আবাস প্রকল্পের টাকা পাওয়ার যোগ্য। মাটির বাড়িতে থাকি। সরকারি অনুদান পাওয়ার জন্য আমরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাদের বাড়ির পরিস্থিতি ঘুরে দেখে গিয়েছিলেন।’ ওই বিজেপি কর্মীর দাবি, তারপরেই তাদের দলের সমর্থক পরিবারগুলিরও নাম এসেছে আবাসের তালিকায়। আর দিন দুয়েক আগে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকাও তাঁদের অ্যাকাউন্টে চলে এসেছে।
বিজেপির সাংগঠনিক বর্ধমান (সদর) জেলা কমিটির সহ সভাপতি মৃত্যুজয় চন্দ্র এই প্রসঙ্গে বললেন, ‘সরকারি অনুদান নিয়ে কোনও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব না থাকাই কাম্য। প্রধানমন্ত্রীও সেটাই মেনে চলেন। এজন্য আউশগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে সাধুবাদ জানাই।’ পাশাপাশি রাজ্যের শাসকদলের নেতাকর্মীদেরও এটাই অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।