বাংলা হান্ট ডেস্ক: কলকাতা,শিলিগুড়ি, আসানসোল, সল্টলেক সহ একাধিক কর্পোরেশনের মেয়র এবং প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে এদিন বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে পৌরসভা গুলির পরিষেবা এবং কাজ কর্মের রিপোর্ট দেখে এদিন প্রচন্ড রেগে যান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
কাজের প্রতি ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের অনীহা দেখে ধমক দেওয়ার পাশাপাশি একসময় মেজাজ হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার কি আমাকে ঝাঁটা নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে?’শুধু তাই নয়, এদিন প্রতিটি পুরসভায় প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি পরিষেবায় গতি আনারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নগরনিগম ছাড়াও হলদিয়ার মতো বেশ কয়েকটি উন্নয়ন পর্ষদের কর্তাদেরও একাধিক ইস্যুতে পরামর্শও দলনেত্রী।
আসলে এদিন জেলাভিত্তিক ও বিভাগীয় প্রশাসনিক রিপোর্ট দেখেই আর মেজাজ ঠিক রাখতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাই ক্ষোভ প্রকাশ করার পাশাপাশি আগামী সোমবারই রাজ্যের ১২১ টি পুরসভার পুরপ্রধান ও প্রশাসকদের নিয়ে নবান্নে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা যাচ্ছে ওই ২৪ জুনের বৈঠকেও হাজির থাকবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সহ পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সচিবরা।
প্রসঙ্গত লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর দেখা যায় রাজ্যের ১২১টি পুরসভার মধ্যে ৬৯টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি, দুটিতে এগিয়ে আছে কংগ্রেস। এমনকি কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪৭টি ওয়ার্ডেই পিছিয়ে তৃণমূল। এছাড়াও আসানসোল, বিধাননগর, শিলিগুড়ির মতো ‘কর্পোরেশন’ এলাকাতেও যথেষ্ট দাপট দেখিয়েছে বিজেপি। তাই নবান্ন কর্তারা মনে করছেন লোকসভা নির্বাচনে কর্পোরেশন, পুরসভা ও শহরাঞ্চলে তৃণমূল কংগ্রেসের হতাশাজনক ফলের কারণেই সম্ভবত উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: নিটের পর বিতর্কে UGC-NET! নেপথ্যে ‘ডার্ক নেট’? তদন্তে নেমেই বিরাট প্রমাণ পেল CBI
নবান্ন সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন,‘অধিকাংশ পুরসভার রাস্তাঘাট বেশ খারাপ। বহু এলাকায় রাস্তায় আলো জ্বলছে না। ময়লা-আবর্জনা দিনের পর দিন রাস্তার মোড়ে মোড়ে পড়ে আছে। অনেক ওয়ার্ডে নিকাশি বন্ধ হয়ে আছে। তার ওপর জবরদখলের সমস্যা। আপনারা কী করছেন? কাউন্সিলররা কি ‘ফিল্ডে’ নামছে না? নাকি শুধু নিজেদের ইনকামের কথা ভাবছে?’
একইভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কাজ নিয়েও। তাদের কাছে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ‘দায়িত্বে কে কে আছেন, কী কী কাজ করছেন?’ এদিন কলকাতা, আসানসোল, শিলিগুড়ি-সহ একাধিক পুরসভা এলাকায় নাগরিক পরিষেবার রিপোর্ট হাতে পাওয়া মাত্রই মেজাজ হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘এবার কি আমাকে ঝাঁটা নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে?’