বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের কপ্টার নিয়ে গন্ডগোল। বিভ্রাটের জেরে পা এবং কোমরে চোট পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার কিছু ক্ষণ আগে কলকাতা বিমানবন্দরে (Kolkata Airport) নামেন তিনি। এর পর মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। বিমানবন্দরে ব্যবস্থা ছিল অ্যাম্বুল্যান্সেরও। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজের গাড়িতেই হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন।
হাসপাতালে তিনি পৌঁছলে হুইলচেয়ার এনে দেন সেখানকার কর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী যদিও হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে সম্মত হননি। গাড়ি থেকে নামার সময় শরীরের ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলতে দেখা যায় তাঁকে। তখনই তাঁকে ধরে নেন হাসপাতালের এক মহিলা কর্মী। মমতাকে ধরে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাসপাতালের ভিতরে ঢোকেন। পরিষ্কার বোঝা যায়, তাঁর হাঁটতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।
মমতার চোট কতটা তা পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখছেন এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা। তাঁর এমআরআই পরীক্ষাও হবে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য তৈরি রাখা ছিল উডবার্ন ওয়ার্ডের সাড়ে ১২ নম্বর কেবিন। সেখানেই পরীক্ষানিরীক্ষার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়। তৈরি ছিলেন চিকিৎসকেরাও। মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছনোর আগেই সেখানে পৌঁছে যান রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা,স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম এবং বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী হয়েছিল ঘটনা? মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ির মালবাজারে মুখ্যমন্ত্রীর পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারসভা ছিল। সভা শেষ করে জলপাইগুড়ির ক্রান্তি থেকে বাগডোগরার উদ্দেশে হেলিকপ্টারে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন সাংবাদিক বিশ্ব মজুমদার এবং মুখ্যমন্ত্রীর দেহরক্ষী স্বরূপ গোস্বামী। মাঝপথে আকাশ কালো করে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি। তিন দিকের আকাশ কালো করে আসে। পাইলট বোঝেন এগোনো ঠিক হবে না।
নীচে বৈকণ্ঠপুরের ঘন জঙ্গল থাকায় তিনি তখনই কপ্টার নামাতে পারেননি। বাগডোগরার দিকে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। অগত্যা তিনি গতিমুখ পরিবর্তন করে উড়তে থাকেন শিলিগুড়ির দিকে। শেষ পর্যন্ত শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে শালুগাড়ার কাছে সেবক এয়ারবেসে জরুরি অবতরণ করে মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার। বস্তুত, ওখানে যে কোনও এয়ারবেস রয়েছে, তা কারওরই সে ভাবে জানা ছিল না।
এর পর মুখ্যমন্ত্রী-সহ কপ্টারের অন্য যাত্রীদের ওই এয়ারবেসের কর্তারা নিরাপদে কাছের সেনা কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁদের রাখা হয়। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর জন্য শালুগাড়ার সেনা কার্যালয়ে পুলিশি প্রহরায় গাড়ি পাঠানো হয়। সেই গাড়িতেই মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সঙ্গীরা বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা হন। বিকেলে বাগডোগরা থেকে বিমানে কলকাতায় ফেরেন মমতা।