বিজেপির বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধী নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জাতীয় নেত্রী হিসেবে তুলে আনতে চায় কংগ্রেস

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের হ্যাটট্রিক করে মসনদে ফিরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে একের পর এক শুভেচ্ছা বার্তা এসেছে তার নামে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তেজস্বী যাদব, অখিলেশ যাদব, রাহুল গান্ধী সহ বিরোধী দল নেতাদের কেউই বাদ পড়েননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই, একটি অন্য প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে বাংলার এই ফলাফলের পর থেকে। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে তবে কি বিরোধীদের অন্যতম প্রধান মুখ হতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও কল্পনায় এখনো অনেকটাই দূরবর্তী, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বর্তমানে দেশের নেতা তা মেনে নিলেন বর্ষিয়ান কংগ্রেস নেতা কমলনাথ। গতকাল রাজভবনে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পরেই কংগ্রেসের উঁচুস্তরের এই নেতার থেকে ভুয়সী প্রশংসাপত্র পেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “আমাদের দেশের নেতা” বলে উল্লেখ করেন কমলনাথ। সাংবাদিকরা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে সামনে কি থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? জবাবে তিনি বলেন, “কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ যথাসময়ে তাদের প্রধান মুখ ঠিক করবে।” গতবার অনেক চেষ্টার পরেও ইউপিএর সঙ্গে জোট বাঁধতে পারিনি তৃণমূল। আঞ্চলিক দলগুলি একজোট হলেও বিজেপির মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তারা তেমন শক্ত প্রতিদ্বন্দিতা তৈরি করতে পারেনি। তাই এবার ইউপিএ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাদের জোট সঙ্গী হিসেবে দেখছেন কিনা তাও এখন প্রশ্নের মুখে।

এই বিতর্কে মুখ না খুললেও কমলনাথ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বলেন, “মমতা এখন আমাদের দেশের নেতা। তিনি টানা তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। নজিরবিহীন বিধানসভা নির্বাচনের কঠিন লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে এই পর্যায়ে পৌঁছেছেন তিনি।”

কমলনাথ আরও বলেন, “মমতাকে একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার, প্রধানমন্ত্রী মোদি, তার নিজের মন্ত্রী, সিবিআই, আয়কর বিভাগের মত ব্যক্তি ও সংস্থাকে একা হাতে সামলাতে হয়েছে। কিন্তু কেউই তার সামনে দাঁড়াতে পারেননি।”

একা হাতে লড়াই করে কঠিন বিপক্ষ বিজেপিকে মাত্র ৭৭ আসলেই থামিয়ে দিতে পেরেছেন তৃণমূল নেত্রী। আরও একবার সবুজ ঝড়ে বাংলায় ২১৩ আসন দখল করেছেন তিনি। শুধু বঙ্গ রাজনীতির ক্ষেত্রে নয়, এই জয় তাই ভীষণভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে গোটা দেশের ক্ষেত্রেও। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জাতীয় ক্ষেত্রে প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে ওঠার মতো যথেষ্ট সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। বর্ষিয়ান কংগ্রেস নেতা কমলনাথ কিছু খুলে না বললেও একথা ঠিক যে বিরোধীদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন হয়ে উঠতে পেরেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এখন আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতির সমীকরণ কতটা বদলায় সে দিকেই নজর থাকবে সকলের।


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর