বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে বিরোধীদের সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল দুর্নীতি। টেট কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে আমফান কেলেঙ্কারি, সারদা নারদা দুর্নীতি সহ একাধিক ইস্যুতে তৃণমূলকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে ছিল বিরোধী দলগুলি। এমনকি প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister Narendra Modi) এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও (Amit Shah) সরব হয়েছিলেন দুর্নীতি ইস্যুতে। শুধু তাই নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারকেও টেনে এনে ছিলেন তারা। সেসময় রাজনৈতিকভাবে তার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করলেও তৃতীয় সরকার গঠনের পর থেকেই দুর্নীতি রুখতে যথেষ্ট তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee)।
গতবছর আমফান ঘূর্ণিঝড়ের সময় বেশকিছু অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছিল সরকারি ত্রাণের টাকা সরাসরি পৌঁছায়নি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের কাছে। বরং তা পেয়ে গিয়েছেন অন্য কেউ। এমনকি দলের নিচু তলার কর্মীদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন অনেক বিরোধী নেতা। যার জেরে এবার শুরু থেকেই তৎপর মুখ্যমন্ত্রী।
ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের সময় সেচ দপ্তরের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। এমনকি পরিষ্কার জানিয়ে ছিলেন, বছর বছর বাঁধ ভাঙলে এভাবে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেকটি বিষয় খতিয়ে দেখে তবেই যেন সেচ দপ্তরকে টাকা দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই সেচ দপ্তরের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যদিও সে সময় সেচ দপ্তরের প্রধান ছিলেন বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তিনটি নির্মাণে দুর্নীতির নিদর্শন পাওয়া গেছে বলেও সূত্রের খবর।
তবে শুভেন্দু বর্তমানে বিরোধী দলনেতা আর তার জন্যই তার বিরুদ্ধে তদন্ত, সমীকরণটা ঠিক আর এত সহজ থাকলো না। কারণ অ্যান্টি কোরাপশন ব্যুরো বা দুর্নীতি দমন শাখাকেও এবার যথেষ্ট শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে মধ্যপ্রদেশের আইপিএস ক্যাডার রিনা মিত্রকে (IPS Rina Mitra)। এর আগে রাজ্যের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক মুখ্য উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় সিবিআই-এর মত সংস্থাতেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
তাই সরকারি আধিকারিকদের কোন দুর্নীতিকে হয়েছে এবার প্রশ্রয় দেওয়া হবে না মোটামুটি স্পষ্ট করে দিতে চাইছে নবান্ন। এমনকি কসবায় ভ্যাকসিন কান্ডেও যে পুলিশের তৎপরতার অভাব ছিল তা জানাতে ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ দুর্নীতি দমনে এবার শুরু থেকেই সরব হচ্ছে তৃণমূল।
গতবছর আমফানের কথা মাথায় রেখে এবছর ইয়াসের ত্রান বিলির ক্ষেত্রেও কড়া নির্দেশ দেন মমতা। গত বছরের মতো ঘটনা এবছর যেন না হয়, তা সরাসরি তিনি মনে করিয়ে দেন দলীয় কর্মী ও সরকারি আধিকারিকদের। অনেকক্ষেত্রেই দুর্নীতি দমন শাখা থাকা সত্ত্বেও নিয়মতান্ত্রিকতার কারণে তা তেমনভাবে দুর্নীতি রুখতে সমর্থ হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর এবারের ভূমিকা যে অনেকটাই ইতিবাচক তা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।