বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কদিন আগেও ভারত সেবাশ্রম সংঘের ভূমিকায় প্রচন্ড ক্ষুব্ধ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসীদের ভূমিকা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। অথচ বছর ঘুরতেই মুখ্যমন্ত্রীর গলায় শোনা গেল একেবারে উল্টো সুর।
ভারত সেবাশ্রমের প্রশংসার মাঝেই কটাক্ষ মমতার (Mamata Banerjee)
নতুন বছরের শুরুতেই সংঘের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বললেন প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যেভাবে সেবাশ্রমের ভলান্টিয়াররা কাজ করেন তার কোন বিকল্প নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘রামকৃষ্ণ মিশন যেমন শিক্ষার দিক দিয়ে এগিয়ে, তেমনি সেবার দিক দিয়ে এগিয়ে ভারত সেবাশ্রম। ঝড়, জল, সাইক্লোন, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগে কাউকে না পেলেও ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আপনারা পাবেন।’
প্রতিবারের মতো এবারও গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিজে চোখে খতিয়ে দেখতে সোমবার গঙ্গাসাগরে গিয়েছিলেন মমতা (Mamata Banerjee)। সেখানে গিয়ে ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দজি মহারাজের ছবিতে নিজে হাতে আরতি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর মেলা আয়োজনে সাহায্য করার জন্য সংঘকে ধন্যবাদ জানান তিনি। নেত্রীর কথায়, ‘গঙ্গাসাগর মেলায় যে শুধু ভারত সেবাশ্রম সংঘ তা নয়, তাদের প্রচুর ভলেন্টিয়ার এখানে কাজ করে। তারা যেভাবে কাজ করে তার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সংঘের আশ্রমে দাঁড়িয়েই তাদের একাংশকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি মমতা (Mamata Banerjee)। একেবারে নিজস্ব স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই এদিন তিনি বলেন, ‘দু-একটা জায়গায় কয়েকজন লোক হয়তো ঠিকভাবে কাজ করেন না। ৯৯% লোক কিন্তু কাজটা করেন। আমি তাদের সবাইকে, এবং স্বেচ্ছাসেবক,তীর্থযাত্রীদেরকেও আমার প্রাণ ভরা অভিনন্দন জানাই।’
আরও পড়ুন: বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল বাংলার মুখ! লন্ডন যাচ্ছেন মমতা, দেওয়া হবে বিরাট সম্মান
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করে জানান সংঘের নামের সঙ্গে যে ‘সেবা’ শব্দটা জড়িয়ে আছে তাঁদের একাংশ নাকি সেই সেবার কাজটাই করেন না। কিন্তু প্রশ্ন হল নাম না করেই এদিন কাদের দিকে আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী? প্রসঙ্গত ভারত সেবাশ্রম সংঘের কার্তিক মহারাজ অনেক আগে থেকেই মমতার ‘চক্ষুশূল’। তাঁর উদ্দেশে তৃনমূল নেত্রী একবার বলেছিলেন, ‘ভারত সেবাশ্রম সংঘকে খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যিনি তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেবেন না বলেন, তাঁকে সাধু বলে মনে করি না ৷ এর অর্থ উনি সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছেন। আমি চিহ্নিত করেছি কে কে করেছেন।’
মুখ্যমত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। সেসময় মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা কটাক্ষ করে সরব হয়েছিলেন স্বামী আত্মস্থানন্দ মহারাজ। তিনি বলেছিলেন, ‘উনি একটা পাগলি। ওঁর কথার কোনও ঠিক নেই। মুখ্যমন্ত্রীর যেটা বলা উচিত, সেটা উনি বলেন না। বরং, প্রধানমন্ত্রীকে উল্টোপাল্টা বলছেন। এটা মাথা খারাপ ছাড়া আর কী হবে!’