কেন্দ্রের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলায় শিল্প ফেরাতে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata Banerjee) । অশোকনগরের (ashok nagar) তৈল ভান্ডার ঘিরে শিল্প তৈরি করতে যত জমি লাগে তা বিনামূল্যে দিতে প্রস্তুত তার সরকার। প্রয়োজনে টাকা দিতেও আপত্তি নেই। এমনটাই জানালেন মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যে ৪০ একর জমি চেয়েছিল ONGC। আরো বেশ কিছুটা জমি চেয়েছিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে জানিয়েছেন, বিনামূল্যে জমি দিতে পারলে খুশি হবে রাজ্য। পাশাপাশি মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যে শিল্প করো। যা জমি লাগবে, তা দেব। যত টাকা লাগে দেব’।
রাজ্যে যাতে তাড়াতাড়ি এই প্রকল্প শুরু করা যায় সেই ব্যাপারে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সাথে জানালেন রাজ্যে বিপুল কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও।ঐ এলাকার ৩০০ মানুষের পূনর্বাসন ও চাকরির ব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, কেন্দ্রের কাছে বাংলাকে ভবিষ্যৎ ‘এনার্জি ডেস্টিনেশন’ হিসেবে গণ্য করার অনুরোধও করেছেন তিনি।
জানিয়ে রাখি, এর আগে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোকনগরের তেল ও গ্যাস উৎপাদন ক্ষেত্রটি দেশকে উৎসর্গ করেছিলেন। অশোকনগর রাজ্যের প্রথম তেল ও গ্যাস মজুদ। প্রধান বলেন, কলকাতা থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ থেকে তেল উত্তোলন করে ভারতীয় তেল কর্পোরেশনের হালদিয়া রিফাইনারিতে (আইওসি) প্রেরণ করা হবে।
প্রকল্পটির উদ্বোধনের পরে তিনি বলেন, অশোকনগর তেল ও গ্যাস রিজার্ভ থেকে উত্পাদন শুরু হওয়ার সাথে সাথে পশ্চিমবঙ্গও সেই তালিকায় যোগ দিয়েছে যেখানে তেল উত্তোলন করা হয়। জানিয়ে রাখি, রাজ্যে তেল ও গ্যাসের প্রথম মজুদটি ২০১৮ সালে আবিষ্কার করা হয়েছিল।
তিনি জানান, ওএনজিসি, পাবলিক সেক্টর সংস্থা (পিএসইউ), অশোকনগর তেল ক্ষেত্র অনুসন্ধানে ৩৩৩১১ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। তিনি বলেন, সংস্থাটি ওপেন একার লাইসেন্সিং পলিসির (ওএলএপি) অধীনে আরও দুটি কূপ অন্বেষণ করবে।
অশোকনগর রিজার্ভে আবিষ্কৃত অপরিশোধিত তেল উচ্চমানের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, তেল খনি থেকে বাণিজ্যিক উত্পাদনের কারণে পশ্চিমবঙ্গের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এবং রাজ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
পাবলিক সেক্টর অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশন (ওএনজিসি) ভারতের অষ্টম হাইড্রোকার্বন উত্পাদন বেসিনকে বেঙ্গল অববাহিকার একটি কূপ থেকে তেল উত্পাদন শুরু করে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, চব্বিশ পরগনা জেলার অশোকনগর -১ কূপ থেকে তেল উত্পাদন শুরু হয়েছে। প্রধান ওএনজিসিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন যে আবিষ্কারটি ভারতের জ্বালানী সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি, অশোকনগর -২ প্রকল্পটি শীঘ্রই বাস্তবায়নের জন্য ভারত সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল।
ওএনজিসি হ’ল দেশের বৃহত্তম তেল ও গ্যাস উত্পাদনকারী। দেশের হাইড্রোকার্বন উত্পাদনে এর ৭২ শতাংশ অংশ রয়েছে। বাংলার অববাহিকা প্রায় ১.২২ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বঙ্গোপসাগরের জলে রয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওএনজিসি বেঙ্গল অববাহিকায় হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধান ও খনন কার্যক্রমে এখন পর্যন্ত ৩৩৩১ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। আগামী দু’ বছরে খননকার্যে ব্যয় হবে ৪২৫ কোটি টাকা।