বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ১০ মার্চ বুধবার হলদিয়াতে মনোনয়ন সেরে নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর সেখানে তিনি একাধিক মন্দির দর্শন করার শুরু করেন। মন্দির দর্শনের সময় আচমকায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বড়সড় এক দুর্ঘটনা হয়। ওই দুর্ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী পায়ে চোট পান। সাংবাদিকদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাকে পিছন থেকে ঠেলা দেওয়া হয়েছিল। আমি পড়ে গিয়ে আঘাত পাই।
এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রিন করিডর করে নন্দীগ্রাম থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। ওনাকে ভর্তি করানো হয় SSKM হাসপাতালে। দুর্ঘটনার পরের দিন মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল থেকে একটি ভিডিও বার্তা জারি করেন। সেখানে তিনি তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের শান্ত থাকার আবেদন জানান, আর বলেন তিনি দুই তিনদিনের মধ্যে আবারও প্রচারে নামতে চলেছেন। কিন্তু ওইদিন তিনি ওনার সঙ্গে ষড়যন্ত্র হয়েছে সেটা বলেন নি।
এরপর কমিশন এবং জেলা প্রশাসন নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হয়ে যাওয়া ঘটনার তদন্ত করে। কিন্তু কোনও তদন্তেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ষড়যন্ত্র হয়েছে সেটার কথা বলা হয়নি। উপরন্তু প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী সেদিনের ঘটনাটিকে নিছকই দুর্ঘটনা বলা হয়েছে। কিন্তু রিপোর্টে সেদিনের ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলা হলেও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সেদিনের ঘটনাটিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেই আখ্যা দিয়েছিল। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী নিজে বেশ কয়েকটি জনসভায় বলেছিলেন, ওনাকে মারার পরিকল্পনা চলছে।
সেদিনের ঘটনার নিয়ে রাজ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলার মাঝে আজ মুখ্যমন্ত্রীর বয়ান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেবরার দলীয় প্রার্থী হুমায়ুন কবীরের সমর্থনে একটি সভা করেন। আর সেই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিজের মুখে স্বীকার করেন যে, সেদিন উনি হোঁচট খেয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নন্দীগ্রাম থেকে প্রচার অভিযান শুরু করেছিলাম। আসে সেখানে একটু হোঁচট খেয়েছিলাম। রাজনৈতিক হোঁচট নয়, শারীরিক হোঁচট। সে যাই হয়ে থাকুক, আমি এখন এটা নিয়ে আর কথা বলব না।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে এবার আসরে নেমেছে বিজেপি। বিজেপির নেতা সায়ন্তন বসু মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে বলেন, ‘প্রথমে উনি বলেছিলেন চার-পাঁচজন মিলে ধাক্কা দিয়েছে। তারপর বললেন গাড়ির বনেটে দাঁড়িয়ে নমস্কার করার সময় বিপত্তি ঘটেছে। আর এখন বলছেন তিনি হোঁচট খেয়েছেন। আসলে এখন তৃণমূল বুঝে গিয়েছে যে হুইল চেয়ারটা ওভার অ্যাক্টিং হয়ে গেছে। তাই বারবার বয়ান বদলাচ্ছেন উনি।”