বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ বিধানসভা কেন্দ্র যে ছিল নন্দীগ্রাম, এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কারণ একদিকে যেমন ছিলেন রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তেমনি অন্যদিকে ছিলেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ফল ঘোষণাতেও যথেষ্ট নাটুকে পরিণতি দেখা গিয়েছিল নন্দীগ্রামে। প্রথমে সংবাদ সংস্থা এএনআই ঘোষণা করে ১২০০ ভোটে জিতে গিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ফল পাল্টে যায়, নির্বাচন কমিশন জানায় আদতে ১৯৫৬ ভোটে জিতেছেন রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।
এই ফলাফল নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। কারচুপির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলা ওঠে বিচারপতি কৌশিক চন্দর এজলাসে। তারপরও ঘটে আরেক কান্ড। বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা এবং মামলা অন্যত্র সরানোর দাবি জানান। পাল্টা দেন শুভেন্দুও। তাপ উত্তাপের জেরে শেষ পর্যন্ত নিজেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ান বিচারপতি কৌশিক চন্দ।
কিন্তু সরে যাবার আগে বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করার অপরাধে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন তিনি। তিনি বলেন, “যদি একজন আইনজীবী কোনও দলের হয়ে দাঁড়াতে পারেন। তখন তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে না। একজন বিচারপতিও সাধারণ মানুষ। তাঁরও কাউকে ভাল লাগতে পারে। তবে কাজের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।” অবশেষে বৃহস্পতিবার সেই জরিমানার টাকা আদালতের বার কাউন্সিলে জমা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
১৫ নভেম্বর রয়েছে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তবে ইতিমধ্যেই মামলা কলকাতা হাইকোর্ট থেকে দেশের অন্য যে কোন কোর্টে সরানোর আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন শুভেন্দু। সেই কারণে আপাতত কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামের নির্বাচন সংক্রান্ত ইভিএম, ভিভিপ্যাট, গণনাকেন্দ্রের ভিডিয়োগ্রাফি-সহ যাবতীয় নথিপত্র যখন নির্বাচন কমিশনকে সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।