বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ড নিয়ে বর্তমানে সরগরম রাজ্য। মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুনের ঘটনায় প্রবল সমালোচিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এর মাঝেই এবার আরও বাড়ল চাপ। শুক্রবার সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুর্নব্যবহার কমিটির সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে ৭ দফা দাবির দাবিপত্র জমা দিলেন। হয় চাষবাস, নাহলে শিল্প, স্পষ্ট বক্তব্য তাঁদের।
সিঙ্গুর থেকে চাপ বাড়ছে মমতার (Mamata Banerjee)!
২০১৬ সালের আগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্টের তরফ (Supreme Court) থেকে সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। প্রায় হাজার একর জমি চাষযোগ্য করে কৃষকদের ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর দেখতে দেখতে ৮ বছর কেটে গেলেও এখনও অবধি সেখানকার অধিকাংশ জমি চাষের যোগ্য নয় বলে দাবি তৎকালীন জমি আন্দোলনকারী চাষিদের একাংশের।
- দাবিপত্রে কী বলা হয়েছে?
এবার সিঙ্গুরের জমি পুনরায় চাষের যোগ্য করে তুলতে সরকারের কাছে সাত দফা দাবি তুলে ধরেছেন সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুর্নব্যবহার কমিটি। গত শুক্রবার সাত দফা দাবি নিয়ে নবান্নে গিয়েছিলেন ২১ সদস্যের এই কমিটির সদস্যরা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) দেখা না পেয়ে ইমেল মারফৎ নিজেদের দাবিপত্র জমা করেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ OBC মামলায় বড় আপডেট! আরও বাড়ল চিন্তা? কী জানাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট?
জানা যাচ্ছে, সিঙ্গুরের চাষিদের একাংশের মূল দাবি হল, চাষের অযোগ্য জমিকে (Singur Land Controversy) পুনরায় চাষের যোগ্য করে তুলতে হবে, নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করতে হবে, অধিগ্রহণ করার আগে জমিতে চাষিদের যা যা অধিকার ছিল সেগুলি ফেরাতে হবে, অধিগ্রহণ করা জমি চাষের যোগ্য না হলে সেখানে কারখানা তৈরি করতে হবে, অধিগৃহীত জমির ১০০ একরে যে ছোট শিল্প ছিল সেগুলি ফেরাতে হবে।
এই প্রসঙ্গে সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুর্নব্যবহার কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক দুধকুমার ধাড়া বলেন, ‘জমি ৩টি কাজে ব্যবহৃত হয়। হয় চাষ, নাহলে বাস, নয়তো শিল্প। কিন্তু সিঙ্গুরের জমিতে চাষও হচ্ছে না, বাসও হচ্ছে না আর শিল্পও হচ্ছে না। এটাই বাস্তব। শুধুমাত্র ৩০০ একরে চাষ হচ্ছে। বাকি জমিটাও যাতে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যায়, সেই কারণে এই কমিটি তৈরি হয়েছে’। এই কমিটির তরফ থেকেই মমতার (Mamata Banerjee) কাছে জমা দেওয়া হয়েছে দাবিপত্র।
এদিকে এই নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সিঙ্গুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনন্দমোহন ঘোষ বলেন, কমিটির সদস্যদের দাবি ঠিক নয়। নিজেদের স্বার্থ পূরণের জন্য এসব বলা হচ্ছে। সিঙ্গুরের ৯০% জমিতেই (Singur Land) চাষ হয় বলে দাবি তাঁর। কিছু জমির মালিক বাইরে থাকেন বলে তাঁদের জমিতে চাষ হয় না। অন্যদিকে হুগলির সিপিএমের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, শাসকদলের তরফ থেকে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এই বিতর্কে জল ঢালতে সরকারের তরফ থেকে সিঙ্গুরের জমিতে নতুন করে সার্ভে করার কথা বলেন তিনি। সৌমিত্রর কথায়, ‘আমরা নিশ্চিত, অধিগৃহীত ৭০০ একর জমিতে চাষ হচ্ছে না। আসল ঘটনাকে আড়াল করে শাসকদল মিথ্যাচার করছে’।