বাংলা হান্ট ডেস্কঃ 2024 লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে সকলের নজরে রয়েছে দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। কেন্দ্র সরকার থেকে শুরু করে বিরোধী দলগুলির পাখির চোখ বর্তমানে এই নির্বাচন। একদিকে যেমন কেন্দ্র সরকার নিজেদের পছন্দের রাষ্ট্রপতিকে জেতানোর লক্ষ্যে ময়দানে নেমে পড়েছে, ঠিক সেরকম ভাবে এক সূত্রে বেঁধে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে ইতিমধ্যে বৈঠক শুরু করে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এক্ষেত্রে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কয়েকদিন পূর্বে একাধিক বিরোধী দলগুলোকে চিঠি দিয়ে দিল্লিতে একটি বৈঠকের ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সেই বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে প্রধানত এই বৈঠকের বিষয়বস্তু ছিল আগামী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী মনোনয়ন করা। সূত্রের খবর, এই দিনের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি হিসেবে শরদ পাওয়ারের নাম প্রস্তাব করেন। এক্ষেত্রে অন্যান্য দলগুলি মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবী মেনে নিলেও শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেন ‘মারাঠা স্ট্রং ম্যান’ শরদ পাওয়ার। এক্ষেত্রে অবশ্য অতীতেও নিজের মত জানিয়েছিলেন তিনি এবং এদিন বৈঠক চলাকালীনও নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকেন পাওয়ার।
এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাষ্ট্রপতির নাম হিসেবে আমাদের সকলের পছন্দ ছিলেন শরদ পাওয়ার। তবে শেষ পর্যন্ত উনি রাজি না হওয়ায় ফের একবার বৈঠক ডাকা হতে পারে, যেখানে নতুন করে কোন নাম প্রস্তাব করা হবে।” তিনি আরো বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে যেকোন একটি নাম মনোনয়ন করা হবে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে যেভাবে দেশের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ থেকে খারাপতর হয়ে চলেছে, সেখানে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো দেশের স্বার্থ রক্ষা।”
শরদ পাওয়ার নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকায় অবশেষে বিকল্প হিসেবে একাধিক মহল থেকে উঠে এসেছে গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর নাম। বলে রাখা ভালো, মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্র গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এক সময় বাংলার রাজ্যপাল পদে নিযুক্ত ছিলেন। তবে এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করা থেকে বিরত থেকেছেন। অন্য মহল থেকে অবশ্য কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহর নাম সামনে উঠে আসলেও এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুনরায় যে বৈঠক ডাকা হতে চলেছে, সেখানে আমরা যেকোনো একটি নাম বেছে নেব এবং সর্বশক্তি দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করব।”
প্রসঙ্গত, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যখন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই করার কথা বলে চলেছেন, সেই মুহূর্তে এদিন মোট 22 টি দলকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও পাঁচটি দল এক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকে। বৈঠক চলাকালে সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধী জোটকে কটাক্ষ করে বিজেপি। তবে বিজেপির এই কটাক্ষ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা আসেনি, তাদের নিশ্চয়ই কোনো কাজ ছিল। তাছাড়া আজ আমাদের বৈঠকে যে এতগুলো দল একসঙ্গে আসতে পেরেছে, সেটাই আমাদের ঐক্যের প্রমাণ।”