বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আসন্ন লোকসভা নির্বাচন (Loksabha Election)। শাসক থেকে বিরোধী সব শিবিরেই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এই আবহেই ৫ দিনের জেলা সফরে বেড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সোমবার থেকে ৫ দিনের ম্যারাথন কর্মসূচী রয়েছে মমতার। সোমবার কোচবিহারে (Coochbehar) সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেখান থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ মমতার। বিএসএফ থেকে শুরু করে সিএএ, একাধিক বিষয়ে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মমতা বলেন, সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা বিএসএফ (BSF) জওয়ানরা সীমান্ত এলাকায় আলাদা করে পরিচয়পত্র দিতে চাইছে! সকলকে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওই পরিচয়পত্র নিলে এনআরসির আওতায় পড়ে যাবেন।’ কোচবিহারবাসীকে সতর্ক করে মমতার পরামর্শ, ‘বিএসএফ আইডেন্টিটি কার্ড দিতে এলে নেবেন না। ওই কার্ড নিলেই কিন্তু আপনি এনআরসি’র আওতায় পড়ে যেতে পারেন।’
রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে দাঁড়িয়ে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Minister Shantanu Thakur) বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলায় সিএএ কার্যকর হবে। এই প্রসঙ্গেই পাল্টা খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, “ভোট আসতেই ক্যা ক্যা চিৎকার শুরু করে দিয়েছে। ভোটের ফ্যা ফ্যা রাজনীতি করার জন্য। সিএএ নিয়ে লাফালাফি করলে চলবে না। কীসের সিএএ? এনআরসি হবে না। সবাই নাগরিক। নাগরিক না হলে ভোটাধিকার থাকত না। সকলেই ভোট দিতে পারেন। ”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিএসএফের অত্যাচারে মানুষ অত্যচারিত। যদিও ওরা আলাদা পরিচয়পত্র দিতে আসে ওসব নেবেন না। বলবেন আপনার আধার কার্ড আছে। রেশন কার্ড আছে। বিপদে পড়লে আমি আছি। আমি বাঘের বাচ্চার মতো আছি। আপনাদের আমি রক্ষা করবই।’’
মমতার কথায় উঠে আসে গত বিধানসভা নির্বাচনে শীতলকুচিতে সিআইএসএফ জওয়ানের গুলিতে চার সাধারণ মানুষের প্রাণ যাওয়ার ঘটনা। ভোটের আগে সেই ইস্যু তুলে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “ভুলে যাননি তো চারটি ছেলেকে কিভাবে বিএসএফ গুলি করে খুন করেছিল। এখানে ওরা কিভাবে অত্যাচারের করে জানি। যখন তখন যাকে তাকে গুলি করে দেয়। অত্যাচার করলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় এফআইআর করবেন। আমি জেলাশাসক, জেলার পুলিশ সুপার, মুখ্যসচিবকে বলব নজর রাখতে। আসলে ওরা ভয় দেখিয়ে ভোট করতে চায়।”
এদিন বিরোধীদের কটাক্ষের পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান সকলের সামনে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গে একাধিক নদীর উপর সেতু নির্মাণ, রাস্তা সম্প্রসারণ, মন্দির সংস্কার, বিমানবন্দর তৈরি ইত্যাদির কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জোর গলায় মমতা বলেন, ‘আমি ভাঙি না গড়ি। তাই বলব, কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না।’
আরও পড়ুন: সব বৃথা! রাজ্য, অভিষেকের নালিশের পরও বিচারপতি গাঙ্গুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল না সুপ্রিম কোর্ট
এদিন এই সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই রাজবংশী (Rajbanshi) ভাষা সরকারি স্কুলে পড়ানোর ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজবংশী স্কুলগুলিকে সরকারি স্বীকৃতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে মোট ১৯২টি স্কুলে রাজবংশী ভাষা পড়ানো হবে। তার মধ্যে প্রায় ১২০টি স্কুল রয়েছে কোচবিহারে। বাকি ৭২টি রয়েছে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায়। পাশাপাশি এদিন একজোটে ১৯৮টি প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। যার মোট বরাদ্দের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা।