বাংলা হান্ট ডেস্ক : শেষ দিনেও প্রাণ গেছে ৪ জনের, গোটা মনোনয়ন পর্ব জুড়ে রাজ্যে অশান্তির ছবিটা স্পষ্ট। হামলা, সংঘর্ষ, বোমাবাজি, গোলাগুলির ঘটনা ঘটার পরও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Manata Banerjee) মনে করেন— পঞ্চায়েত ভোটে এত শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন এর আগে পশ্চিমবঙ্গে হয়নি। অতীতের তিনটি পঞ্চায়েত ভোটে মৃত্যুর সংখ্যা তুলে ধরার সঙ্গেই মমতার আরও দাবি, এ বার ভাঙড়ে যে হিংসার ঘটনা হয়েছে তার দায় বিরোধীদেরই।
আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে নামখানার ইন্দিরা ময়দানে অভিষেকের সভায় বক্তব্য রাখেন মমতা। সেই সভা থেকে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমকে একই বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। তাঁর আক্রমণের নিশানা থেকে বাদ পড়েনি আইএসএফ-ও। তবে সরাসরি নওশাদ সিদ্দিকি (Nawsad Suddque) কিংবা তাঁর দলের নাম করেননি তিনি। তিনি বলেন, ‘ভাঙড়ের ঘটনা কিছু গুন্ডা করেছে। তৃণমূল করেনি। আমাদের দু’জন কর্মী মারা গিয়েছে।’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের সভায় মমতা বলেন, ‘কংগ্রেস অনেক রাজ্য চালিয়েছে। সিপিএমের সবচেয়ে বড় দোসর। বিজেপির বড় দোসর। আর পার্লামেন্টে (সংসদ) আমাদের সাহায্য চাও। আমরা করব তা-ও বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু মনে রেখো, বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে ঘর করে আমাদের কাছে বাংলায় সাহায্য চাইতে আসবে না।’
সভার শুরুতেই মমতা জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নন, তৃণমূলের নেত্রী হিসাবে তিনি বক্তব্য রাখতে এসেছেন। তার পরই পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘২ লক্ষ ৩১ হাজার মনোনয়ন জমা পড়েছে। এত শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন এর আগে কখনও হয়নি।’ বাম আমলের ‘অশান্তি’র প্রসঙ্গও টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘২০০৩ সালে ৭০ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে মারা গিয়েছিলেন ৩৬ জন।’
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে বিজেপি, বামেদের পাশাপাশি কংগ্রেস শিবিরও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে। ধারাবাহিক ভাবে হিংসার অভিযোগ তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অধীরের জেলা মুর্শিদাবাদে এক কংগ্রেস কর্মী এবং এক তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির খুনের ঘটনার ইতিমধ্যেই হাত-জোড়াফুল পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে মমতার মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশ মনে করছেন।
মমতা ২০১৩ সালের ভোটের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘কী করেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী? ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।’ কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে মণিপুর হিংসার কথাও তোলেন তিনি। বলেন, ‘সেন্ট্রাল ফোর্স তো মণিপুরেও নিয়ে গেল। কী হল? সেন্ট্রাল মিনিস্টারের বাড়িই জ্বালিয়ে দিয়েছে। ১৫০ জন মারা গিয়েছে। কিছু করতে পারেনি।’