বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ হত্যাকান্ডের মামলায় আজ সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ মাসের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েছে ইতিমধ্যেই। শনিবার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করার পর অবশেষে আজ ১৬৪ দিনের মাথায় তার সাজা ঘোষণা করেছেন কলকাতার শিয়ালদা আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস।
সঞ্জয়ের ফাঁসি না হওয়ায় আশাহত মমতা (Mamata Banerjee)
গত বছরের আগস্ট মাসে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের নির্মম ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেখে শিউরে উঠেছিলেন গোটা দেশবাসী। আরজিকরের প্রতিবাদ আন্দোলনের আঁচ আছড়ে পড়েছিল আন্তর্জাতিক স্তরেও। সোমবার সকাল থেকেই সকলের নজর ছিল এই আরজি কর মামলার দিকে। সকলেই আশা করেছিলেন অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে ফাঁসির সাজা শোনাবেন বিচারক। কিন্তু তা হয়নি, সবার সমস্ত আশায় জল ঢেলে দিয়েই বিচারক দোষী, সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি দিয়েছেন। যা শোনার পর মন ভেঙে গিয়েছে অনেকেরই।
সোমবার বিকেলে শিয়ালদা আদালতে বিচারক রায় ঘোষণা করতেই সমালোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহল থেকেও। সোমবারে জেলা সফরে মালদা গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেখান থেকেই আরজি কর কাণ্ডের রায় শোনার পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন,’ প্রথম দিন থেকে আমরা ফাঁসির দাবী করেছিলাম। এখনও তাই করছি। তবে আদালতের রায় নিয়ে কিছু বলবো না।’
প্রসঙ্গত আরজিকর কাণ্ডের পর রাজ্যে ঘটে গিয়েছে আরও একাধিক ধর্ষণ-খুনের ঘটনা। ইতিমধ্যেই এমন তিনটি ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের ফাঁসির শাস্তি দিয়ে ঘোষণা করেছে আদালত। সেই প্রসঙ্গ টেনেই এদিন নাম না করেই CBI-কে কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) আজ বললেন, ‘আমরা তো তিনটে মামলায় ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে দিয়েছি। ৫৪ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে। এই মামলা আমাদের হাতে থাকলে অনেক আগেই মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করানো যেত। কিন্তু আমাদের হাত থেকে কেসটা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এই ধরনের নরপিশাচদের চরম শাস্তি হওয়া উচিত’।
আরও পড়ুন: RG Kar ধর্ষণ-হত্যা কাণ্ডে যাবজ্জীবন সঞ্জয়ের! ছেলের শাস্তি শুনে কী বললেন মা?
সোমবার রায় ঘোষণা করার সময় বিচারক জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনাকে বিরল থেকে বিরলতম বলে আমার মনে হয়নি’। এই কারণেই আজ সঞ্জয়ের ফাঁসি সাজা ঘোষণা করা হল না। আর তাতে মুখ্যমন্ত্রীও যে আশাহত হয়েছেন সে কথা স্পষ্ট হল তার মন্তব্যতেই। খানিক আফসোসের সুরেই এদিন তিনি বললেন, ‘ফাঁসি হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’
প্রসঙ্গত সোমবার থেকেই জেলা সফরে বেরিয়ে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। এমন গুরুত্বপূর্ণ দিনে সকাল বেলায় রওনা দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আরজি কর প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘সবাই চান, ফাঁসির সাজা হোক। প্রথমে তো আমিই ফাঁসির দাবি তুলে রাস্তায় নেমেছিলাম। সবাই নেমেছিল। আগের কয়েকটা ধর্ষণ-খুন মামলায় দোষীদের মৃত্যুদণ্ড শুনিয়েছে আদালত। খুব ভালো কাজ করেছে পুলিশ। তবে বিচারকদের সাজা ঘোষণা করতে একটু সময় লাগে। সবদিক খতিয়ে দেখেই তাঁরা রায় দেন।’