বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলায় একের পর এক দুর্নীতি মামলায় বেসামাল পরিস্থিতি তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress)। একদিকে যখন বিরোধীরা এ সকল ইস্যুকে হাতিয়ার করে শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে চলেছে, আবার অপরদিকে মানুষের মধ্যেও ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এবার দলের ভাবমূর্তি বজায় এবং মানুষের মধ্যে বিশ্বাস পুনরায় জাগিয়ে তোলার জন্য বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর নিতে চলা নয়া আর্থিক সংস্কার বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে বেশ চ্যালেঞ্জের হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কি এই পদক্ষেপ? আসলে অতীতে কেন্দ্র থেকে অনুদান আসলেও পরবর্তী সময়ে পঞ্চায়েত স্তরে তার অধিকাংশই চুরি হয়ে যেত। ফলে গরিব মানুষের কাছে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছাতো না। ফলে এই সকল চুরি বন্ধ এবং মানুষের অধিকার তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে আর্থিক সংস্কারের পথে হাঁটতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের কাজ ঠিকমতো চলছে কিনা, তা দেখাশোনা করার জন্য এবার অফিসারদের বিশেষ দায়িত্ব দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গতকাল এ প্রসঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়, যেখানে বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করেছে সরকার। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এবার থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতে ঠিকমতো কাজ হচ্ছে কিনা, তা পরিদর্শন করতে হবে বিডিওকে। এক্ষেত্রে এক মাসের মধ্যে অন্তত তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে সকল কাজ পরিদর্শন করতে হবে। অপরদিকে, একটি করে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি পরিদর্শন করতে হবে জেলা শাসকদের এবং জেলা পরিষদের হিসেব খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেওয়া হতে চলেছে ডিভিশনাল কমিশনারকে। এভাবেই প্রত্যেকের ওপর নয়া দায়িত্ব দেওয়া হতে চলেছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ‘জয় বাংলা পোর্টাল’ নামে রাজ্য সরকারের একটি ডাইরেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফার পদ্ধতি চালু রয়েছে। তবে বর্তমানে গোটা বঙ্গ জুড়ে একটিমাত্র পোর্টাল বানাতে চলেছে সরকার। এই প্রসঙ্গে চারজন অফিসারকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার পাশাপাশি ১৪ জনের একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হতে চলেছে।
বলে রাখা ভালো, এহেন আর্থিক সংস্কার বাংলায় বিগত বেশ কয়েক বছরে চোখে দেখেনি মানুষ। ফলে বর্তমানে যখন একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসে চলেছে, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে রাজ্যের পদক্ষেপ যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে একদিকে যেমন দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে, ঠিক তেমনভাবে গ্রাম বাংলার মানুষের মধ্যে পুনরায় একবার সরকারের প্রতি বিশ্বাস যোগ্যতা জন্ম দেওয়া যাবে বলেই মনে করছেন সকলে।