এতদিনে টনক নড়ল রাজ্যের! টাইট ডেডলাইন বেঁধে দিল নবান্ন 

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ক্যালেন্ডারের হিসাবে ২০২৪ শেষ হয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে নতুন বছর ২০২৫। অন্যদিকে চলতি অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২৪-২৫ শেষ হতে হাতে বাকি আর মাত্র তিন মাস। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকাই খরচ করে উঠতে পারিনি রাজ্যের আট জেলা। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের জন্য বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা খরচে এখনো অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বাংলার একাধিক জেলা। কিন্তু ৩১ শে মার্চের মধ্যেই ওই টাকা খরচ করার ব্যাপারে এবার নড়েচড়ে বসেছে নবান্ন (Nabanna)।

এবার প্রকল্পের সময় বেঁধে দিলেন মমতা (Mamata Banerjee)

সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত দপ্তরের মাধ্যমে জেলাগুলিকে নির্মীয়মান প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার (Mamata Banerjee)। নবান্নের হিসাব বলছে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়নি রাজ্যের। ওই টাকা চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই খরচ করে ফেলতে চায় নবান্ন। এই টাকা খরচের দিক দিয়ে সব থেকে পিছিয়ে রয়েছে রাজ্যের দুটি জেলা। যার মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মুর্শিদাবাদ। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে দার্জিলিং,দক্ষিণ দিনাজপুর,মালদা,হাওড়া,পুরুলিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগণা।

পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকা খরচের বিষয়ে এই জেলাগুলি অনেকটাই পিছিয়ে। গত বছর অর্থ কমিশনে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পেয়েছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা। কিন্তু বরাদ্দ হওয়া ৫৩২ কোটি টাকার মধ্যে ২৫২ কোটি টাকা এখনও খরচ করে উঠতে পারেনি এই জেলা প্রশাসন। মুর্শিদাবাদ জেলায় বরাদ্দ করা হয়েছিল ৪৯৬ কোটি টাকা। সেখানেও এখনও ২৩৭ কোটি টাকা খরচ হওয়া বাকি। এছাড়া বেশ কিছু জেলার সন্তোষজনক রিপোর্ট পেয়েছে নবান্ন (Mamata Banerjee)। তার মধ্যে অন্যতম কোচবিহার এবং নদীয়া। এই দুই জেলায় বরাদ্দকৃত অর্থের প্রায় ৮০ শতাংশই খরচ হয়েছে বলে খবর।

অন্যদিকে নতুন বছরের শুরুতেই নবান্নের সভাঘর থেকে প্রশাসনিক বৈঠক সেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই বৈঠক থেকে তিনি জানিয়েছেন কোনো প্রকল্প ফেলে রাখা যাবে না। যে কাজগুলি চলছে এই অর্থবর্ষেই তা শেষ করে ফেলতে হবে। তারপরে নবান্নের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী তিন মাসের মধ্যেই জেলায় জেলায় নির্মীয়মান প্রকল্পের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর কাজের অগ্রগতির বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের সদর দপ্তরে রিপোর্টও পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিকে।

আরও পড়ুন: মোদী ম্যাজিক আর শেষ হবে না! প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আশা ছাড়লেন মমতা? তৃণমূল সুপ্রিমোর কোথায় তোলপাড়

প্রসঙ্গত এমনিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুযোগ পেলে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হয় রাজ্য (Mamata Banerjee)। ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে আবাস যোজনা প্রকল্প এমনই একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে লোকসভা ভোটের আগে ১০০ দিনের মজুরদের বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি গত বছরের ডিসেম্বর মাসেই বাংলার প্রায় ১২ লক্ষ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাই পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকা যদি রাজ্য সময় মতো খরচ করতে না পারে তাহলে সেটিকে নবান্নের ব্যর্থতা হিসেবেই দেখাতে চাইবে বিরোধীদল।

Nabanna

রাজ্যের এক মন্ত্রীর কথায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বরাদ্দ টাকা খরচ করতে পারলে আগামী অর্থ কমিশনে বাড়তি দাবি করারও সুযোগ থাকবে। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই ষোড়শ অর্থ কমিশন তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। নতুন বছরের শুরুতেই ষোড়শ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানগড়িয়ার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল নবান্ন সভাঘরে বাংলার সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক সেরেছেন। ওই বৈঠকে রাজ্যের পাওনার দাবিতে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে এই ষোড়শ অর্থ কমিশন গঠন করার আগেই পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ টাকা শেষ করে ফেলতে চাইছে রাজ্য।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর