বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার আরজি কর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক। কিন্তু ফাঁসি না দিয়ে ধর্ষণ-খুনের মতো ঘটনায় সঞ্জয়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাই তাঁর পরামর্শ মতোই সঞ্জয়ের ফাঁসির আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই মামলা দায়েরের অনুমতিও মিলেছে।
সঞ্জয়ের প্যারোলে ছাড়া পাওয়ার আশঙ্কা মমতার (Mamata Banerjee)
সোমবারেই জেলা সফরে বেরিয়ে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। আজ মালদাহের একটি সরকারি অনুষ্ঠান থেকেই সঞ্জয়ের প্যারোলে ছাড়া পেয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে জোরালো প্রশ্ন করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘যাবজ্জীবন মানেটা কী? যাবজ্জীবন হলে তো অনেকে প্যারোলে ছাড়া পেয়ে যায়। অপরাধী বেঁচে থাকলে তো আবার অপরাধ করবে। কেউ যদি দানবিক হয় সমাজ কি মানবিক হতে পারে? কেউ অন্যায় করলে কি তাকে ছেড়ে দেব? আরজি কর মামলায় আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম। এটা জঘন্য,বিরলতম,স্পর্শকাতর একটা ঘটনা’।
মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) আরও সংযোজন, ‘আমি আইনজীবী ছিলাম। তাই আইনটা আমি একটু একটু জানি।’ এরপর রাজ্যের আনা অপরাজিতা বিলের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বললেন, ‘এই সমস্ত জঘন্য ঘটনা রোধ করার জন্যই আমরা অপরাজিতা বিল এনেছি। ধর্ষণ, খুন, নারীদের উপর নৃশংস অত্যাচারে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের জন্য সেই বিলে প্রাণ দণ্ডের বিধান দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই বিল বিধানসভায় পাশ হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র বিলটা আটকে রেখেছে। কার্যকর করা যাচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: নিজের জমিতেই বাবাকে সমাধি দিতে পারছেন না! শেষমেষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ছেলে
সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ায় গতকালই নাম না করেই সিবিআইকে নিশানা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেছিলেন, ‘আমাদের হাতে তদন্তভার থাকলে এতদিনে ফাঁসির সাজা হয়ে যেত। কিন্তু কেসটা আমাদের হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ প্রসঙ্গত গত বছরের আগস্ট মাসে আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকান্ডের পর গর্জে উঠেছিল সারা বাংলা। সেই সময় এই সমস্ত নৃশংস অপরাধের জন্য কড়া শাস্তির দাবিতে আইন প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় ধর্ষণ বিরোধী এই ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল’ পেশ করা হয়েছিল। এই বিল নিয়ে বিজেপি কোনো বিরোধিতা করেনি। ফলে তা বিধানসভায় পাশ হয়ে যায়। কিছুটা সময় যাওয়ার পর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ওই বিলের সই করে তা রাষ্ট্রপতির দরবারে পাঠান। তবে এখনও রাষ্ট্রপতির কাছে আটকে রয়েছে এই অপরাজিতা বিল। এই কারণেই এখনো পর্যন্ত তা কার্যকর করা যায়নি।