মমতার এক সিদ্ধান্তে বড় ‘ধাক্কা’ পর্ষদের! জলে গেল লক্ষ লক্ষ টাকা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের  সভাপতি গৌতম পাল গত সপ্তাহেই সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষাতেও এবার থেকে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করা হবে। ওই ব্যবস্থা অনুযায়ী বছরে ২ বার পরীক্ষা হবে প্রাইমারি স্কুলে। পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছিলেন প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে। কিন্তু গোটা বিষয়টা সম্পর্কে নাকি অন্ধকারে রাখা হয়েছিল খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee)।

মমতার (Mamata Banerjee) এক সিদ্ধান্তে সব শেষ!

পশ্চিমবঙ্গের প্রাইমারি স্কুলে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করার খবর কানে আসতেই মেজাজ হারান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সঙ্গে সঙ্গে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর থেকেই প্রাথমিকের এই সেমিস্টার সিস্টেম নিয়ে তোলপাড় রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর। সাংবাদিক বৈঠক করে তোড়জাড় করে জানানোর পরেও মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে বাতিল করতে হচ্ছে প্রাথমিকে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করার ঘোষণা।

তাঁকে না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভরা সভার মাঝে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও ছেড়ে কথা বলেননি মমতা (Mamata Banerjee)। সকলের সামনে শিক্ষা মন্ত্রীকে রীতিমত ভর্ৎসনা করেছিলেন তিনি। তৃণমূল নেত্রীর সিদ্ধান্তে রাতারাতি বিফলে যায় সব আয়োজন। প্রাথমিক স্কুলে সেমিস্টার সিস্টেম চালু করার এই ঘোষণা করার বিষয়টা তো  রাতারাতি হয়নি। রীতিমতো একটি কমিটি গঠন করে ৪০ দিন ধরে তৈরি করা হয়েছিল ব্লু প্রিন্ট। কতটা আয়োজন করা হয়েছিল এই সেমিস্টার সিস্টেম চালু করার জন্য?

পর্ষদ সূত্রে খবর প্রাথমিকে সেমিস্টার পদ্ধতির নীল নকশা  বানাতে খরচ হয়েছিল  ৫ লক্ষের বেশি টাকা। ৪০ দিন ধরে চারজন পরামর্শদাতা মিলে পর্ষদে বসে এই কাজ করেছিলেন। সূত্রের খবর ৫ লক্ষেরও বেশি টাকা খরচ হয়েছিল শুধু নগদে। ওই চার পরামর্শদাতাদের যাতায়াত এবং সম্মানিকের জন্য ওই টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু আখেরে কোন লাভই হলো না। টানা ৪০ দিনের সমস্ত পরিশ্রম থেকে শুরু করে ৪০ লক্ষ টাকা সবই গিয়েছে জলে।

আরও পড়ুন: অভিষেক নয়, সর্বোচ্চ নেত্রী মমতাই শেষ কথা! শিল্পী বয়কট বিতর্কে অনড় কুণাল

সূত্রের খবর পরামর্শ দাতাদের ওই কাজে বেজায় রুষ্ট হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পর্ষদের প্রাক্তন কর্তাদের এই কাজে সংযুক্ত করা হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে। পর্ষদের ওই কর্মকাণ্ডে বেশ কয়েকজন আধিকারিকও বেশ বিরক্ত। প্রশ্ন উঠছে টেন্ডার ছাড়া এই কাজ হল কি করে? আর এই প্রশ্ন তুলেছেন খোদ কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি পর্ষদ। বারবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালকে।

TET

বৃহস্পতিবার নবান্নের সভাঘরে এই সেমিস্টার পদ্ধতি নিয়ে রীতিমতো রেগে আগুন হয়ে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে রীতিমতো ধমক দিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন, কেন তাঁকে না জানিয়ে এই নতুন ব্যবস্থা চালু করতে বলা হয়েছে? ব্রাত্য বসুকে এদিন তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রাথমিকে যেভাবে পঠন-পাঠন চলছে তেমনভাবেই চলবে। কোন পরিবর্তন করা যাবে না। রাজ্যের অভিভাবক হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন এই সেমিস্টার ব্যবস্থার চালু হলে ছোট ছোট শিশুদের ওপর চাপ পড়বে,বোঝা বাড়বে।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর