বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্য জুড়ে সরকারি প্রকল্পে কারচুপির অভিযোগ। বাদ নেই ‘জল জীবন মিশন’-ও। এই সরকারি প্রকল্পে রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে উঠে আসছে পানীয় জলের অপব্যবহার করার অভিযোগ। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছে মোট ১৯ হাজার ৬২টি অভিযোগ। FIR দায়ের হয়েছে মোট ৪৬৭টি।
‘জলচুরি’ নিয়ে শুরু মমতার (Mamata Banerjee) অ্যাকশন
চলতি মাসেই ২ ডিসেম্বর নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেখান থেকেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ ডিপিআর তৈরিতে জড়িত ঠিকাদারদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এমনকি তাদের ব্ল্যাক লিস্টেড-ও করা হতে পারে। এই জল চুরির ঘটনা সামনে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে এই পানীয় জল চুরি শুধু বেআইনিই নয়, এটি একটি বিপজ্জনক প্রবণতাও।
কারণ, অনেক সময় এই পানীয় জল থেকেই দূষণের কারণে বড়সড় বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। তারপরেই রাজ্য জুড়ে এই জল চুরি রুখতে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জল চুরি সমস্যার পরিমাণ জানতে সমীক্ষা করারও নির্দেশ দিয়েছেন মমতা (Mamata Banerjee)। তাঁর নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। সমীক্ষা করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে এমনও অনেক জায়গা আছে যেখানে পাইপ আছে কিন্তু জল নেই।
এপ্রসঙ্গে আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এমন বহু এলাকা আছে যেখানে দেখা গিয়েছে, পাইপলাইন বসানো হলেও আশেপাশে জলের কোনও উৎস নেই। আবার কোথাও কোথাও কোনো ধরনের মাটি পরীক্ষা না করেই কিংবা জলের উৎস পরীক্ষা না করেই পাইপলাইন বসানোর রিপোর্ট তৈরী হয়েছে।
রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায় জানিয়েছেন, ‘ জল চুরি হচ্ছে, এমন প্রায় ২০ হাজার ১৭০টি পয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনে খনন করে হোটেল, কিংবা পেট্রোল পাম্প,আইসক্রিম কারখানা, পোল্ট্রি ফার্ম, কিংবা নির্মাণ সাইট, এমনকি রাস্তার পাশের গ্যারেজ ও কৃষি খামারেও জল চুরি হচ্ছে। প্রায় ৪৮০টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়াও শুরু হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বরফ গলার ইঙ্গিত! অবশেষে রাজ্যের নীল-সাদাকেই মান্যতা দিল কেন্দ্র
রিপোর্ট বলছে পূর্ব মেদিনীপুরে ৩৮৯৩টি , দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩৮৭৯টি এবং উত্তর ২৪ পরগনায় মোট ৩০৩১ টি জলচুরির ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও পূর্ব বর্ধমানে ২৬০৩ টি এবং নদিয়া জেলায় ২৩১৬ টি ঘটনা শনাক্ত করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জল চুরির অভিযোগ এনে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। তাই এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই সুর চড়িয়েছেন, বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘জল জীবন মিশনে পশ্চিমবঙ্গ অন্যান্য রাজ্যের থেকে পিছিয়ে। রাজ্য সরকার কেন্দ্রের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করলে পশ্চিমবঙ্গের চেহারা আজ আমূল বদলে যেত। তৃণমূল কংগ্রেসই পশ্চিমবঙ্গকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে’।