বাংলা হান্ট ডেস্ক : একদিন আগেই গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতিতে আদালতের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভাইঝি বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়কে (Bristi Mukherjee)। জানা যাচ্ছে, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের মামাতো ভাই তৃণমূল নেতা নিহার মুখোপাধ্যায়ের (Nihar Mukherjee) মেয়ে। অবশ্য নিহারবাবুর দাবি, তাঁর মেয়ে মানসিক রোগী। এমনকী বৃষ্টি কবে গ্রুপ সির নিয়োগের পরীক্ষা দিয়েছিলেন বলেও মনে করতে পারছেন না তিনি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে চাকরি পেলেন কী করে?
নিহারবাবু এই প্রসঙ্গপ বলেন, ‘মেয়ে কী করে চাকরি পেয়েছে ঠিক জানি না। ও মানসিক রোগী। পিজি হাসপাতালে ওর চিকিৎসা চলছে। ও সারাদিন ঘুমায়।’ কবে পরীক্ষা দিয়েছিলেন বৃষ্টি? এর উত্তরে নিহারবাবু বলেন, ‘চাকরি যখন পেয়েছে তখন নিশ্চই পরীক্ষা দিয়েছিল। ওর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে সব খবর তো আর পেতাম না।’
বৃষ্টি যে স্কুলে চাকরি করতেন সেই বোলপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুলক আচার্য বলেন, ‘২০১৯ সালে এই স্কুলে চাকরি পান বৃষ্টি। যেখান থেকে সুপারিশ পত্র আসার কথা সেখান থেকেই এসেছিল। নিয়মিত স্কুলে আসত না। দু-তিন স্কুলে এসেছে। কোন কাজ করত না। স্কুলে এসে বসে থাকত। কারওর সঙ্গে তেমন কোথাও বলত না। দেখে অস্বাভাবিক লাগত। তারপর হঠাৎ ইস্তফা না দিয়েই চলে যায়। কোথায় যায় জানি না।’ অবশ্য স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়কে বেশ কয়েকবারই স্কুলে দেখা গেছে।
এতকিছুর মধ্যেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কও স্বীকার করে নিয়েছেন নিহারবাবু। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আমার পিসতুতো দিদি। তবে তাঁর সঙ্গে খুব একটা বেশি যোগাযোগ হয় না। মামা অনিল মুখোপাধ্যায়ের ছেলে নীহার মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে বৃষ্টি। নীহারবাবু বর্তমানে বীরভূম জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ। ফলে বিরোধীদের অভিযোগ প্রভাব খাটিয়ে বৃষ্টির চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল বৃষ্টিকে। শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশে তার চাকরি বাতিল করা হয়েছে।
বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘এতদিন চাকরি চুরিতে শাসক দলের নেতাদের নাম জরিয়েছিল। এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রীর প্রবারের নাম জড়াল। এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলবেন তিনি সৎ। তার দলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ নিজের বাড়িতেই ঘুঘুর বাসা। প্রভাব খাটিয়ে ভাইজির চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।’