বাংলাহান্ট ডেস্ক : এসএসসি কেলেঙ্কারি মামলা নিয়ে তুমুল শোরগোল রাজ্য রাজনীতির ময়দানে। বলাই বাহুল্য এই মামলায় নাম জড়িয়েছে শাসকদলের তাবড় নেতা মন্ত্রীদের। গতকালই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিজাম প্যালেসে তলব করে জেরা করে সিবিআই। অন্যদিকে এই কেলেঙ্কারির অভিযোগেই বিদ্ধ শিক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতেও শুরু করেছে বিজেপি এবং বামেরা। কিন্তু এহেন পরিস্থিতিতে কি কেচ্ছা কেলেঙ্কারি থেকে দল এবং সরকারকে দূরে রাখতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি দলীয় সভায় যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই কার্যত রণংদেহি রূপে দেখা যায় তাঁকে। এই সভা থেকেই রীতিমতো কড়া বার্তা দিয়ে দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। এদিন তৃণমূলের নেতা কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা কুকর্ম করে, তাদের কিন্তু মানুষ চিহ্নিত করে, মানুষ তাদের ঘৃণা করে, মানুষ তাদের ভালবাসে না। আমিও তাদের ভালবাসি না।’
এখানেই শেষ নয়, দলের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘মনে রাখবেন, কিছু লোক আছে, সবাই নয়, এটা ০.১ শতাংশও হবে না। এরা সব জায়গাতেই আছে। হরিণ যেমন মুখটা লুকিয়ে রেখে ভাবে আমার পিছনটা আর কেউ দেখতে পারছে না, আমার শরীরটা কেউ দেখতে পারছে না, কিন্তু শরীরটা তো সবটাই বাইরে আছে, মুখটা তো শুধু ঢাকা আছে।’ বলাই বাহুল্য, এদিন বিকেলেই সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অন্যদিকে এসএসসি ভবনেও কড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার নির্দেশ দেওয়া হয় হাইকোর্টের তরফে। ফলে সব মিলিয়ে যে মমতার এই মন্তব্য অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ তেমনটাই মত পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের।
অন্যদিকে এই ইস্যুতে মাঠে নেমেছে বিরোধীরাও। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘ ইয়ে তো স্রেফ ঝাঁকি হ্যায়, মথুরা কাশি বাকি হ্যায়। সবে তো দু জন মন্ত্রী। এক বার টেটের ফাইল খোলা হোক, পুরো মন্ত্রিসভার নাম উঠে আসবে। পার্থবাবু সহযোগিতা করুন। সিবিআইকে বলুন, দিদিমণি কালীঘাট থেকে কাদের নাম পাঠিয়েছেন। ভাইপো কত বড় লিস্ট পাঠিয়েছেন।’
একই সুর কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের গলাতেও। তিনি বলেন ‘ পশ্চিমবঙ্গে দিনের পর দিন নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ উঠে চলেছে। কে কে এর সঙ্গে জড়িত, এখন সেই সাজা ঘোষণাই বাকি রয়েছে। এক জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাঁর মেয়েকে তালিকার বাইরে চাকরি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কার নির্দেশে ওই দুর্নীতি হয়েছে, তা স্পষ্ট হওয়া উচিত। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর উচিত, গোটা বিষয়টি খোলসা করে বলে দেওয়া।’ তবে সব কিছুর মধ্যেও যে দল এবং সরকারের গা বাঁচাতে চাইছে তৃণমূল তা যেন বড়ই বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠছে মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক বক্তব্যে।