বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্বাধীনতা সংগ্রামে পশ্চিমবঙ্গের অবদান কতটা, সেটা হয়ত কাউকে আর নতুন করে বুঝিয়ে দিতে হবে না। দেশ স্বাধীনের জন্য বাংলার প্রতিটি পাড়া থেকেই বিপ্লবীরা ইংরেজদের বন্দুকের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়েছিল। কোনও রাজ্যকে ছোট করা না, তবে এটুকু বলা যেতে পারে যে শুধুমাত্র বাংলা থেকেই যত বিপ্লবী স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন, সেই সংখ্যাটা ভারতের বাকি রাজ্যগুলো মিলিয়েও পার করতে পারবে না।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, ক্ষুদিরাম বসু, বিনয়, বাদল, দীনেশ, মাতঙ্গিনী হাজরা সহ বহু বহু বিপ্লবী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম আমরা জানি। এছাড়াও অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী রয়েছে, যারা কোনও দিনও প্রচারের আলোয় আসতে পারেন নি। কিন্তু তাঁদের অবদানও কম ছিল না। প্রতিটি ভারতীয়র মনে স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে সবার আগে বীর বাঙালি বিপ্লবী নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের নাম উঠে আসে।
এছাড়াও গোটা ভারত থেকে ভগৎ সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ, সুখদেব সহ আরও হাজারো বিপ্লবীর রক্তেই ভারতের স্বাধীনতা এসেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল আমাদের অনেকেই হয়ত তাঁদের সেই বলিদান মনে রাখতে পারিনি। তবে, এবার বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
উল্লেখ্য, দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে পাঠানো ট্যাবলো বাতিল করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফ থেকে। আর এই নিয়েই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। জানা গিয়েছে যে, যেই ট্যাবলোটি বাতিল করা হয়েছে, সেটির মাধ্যমে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বীরত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছিল।
কেন্দ্রের এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়েছে যে, বাংলার ট্যাবলো বাতিলের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত বাংলার জনগণ মর্মাহত। মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে পশ্চিমবঙ্গের অবদান অনস্বীকার্য। নিজের চিঠিতে এক, এক করে অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীরই নাম নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, নেতাজি সুভাষ চন্দ্রদের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে করা ট্যাবলো বাদ দেওয়া হলে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বলিদানকে ছোট করা হবে।
উল্লেখ্য, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে বাংলার ট্যাবলো বাদ দেওয়া হয়েছে বলে খবর রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের তরফ থেকে এটা এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজ্য সরকারকে জানানো হয়নি। তাই মুখ্যমন্ত্রী আগাম চিঠি দিয়েই বাংলার ট্যাবলো কুচকাওয়াজে রাখার আবেদন জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় এটাই যে, কেন্দ্রের তরফ থেকে এই নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া মেলে।