বাংলা হান্ট ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাপটের সাথে লড়াই করে তৃতীয়বারের জন্য সরকারে এসেছে তৃণমূল ব্রিগেড। তবে এবার, বাংলার বাইরেও জাতীয় রাজনীতিতে ক্রমশ নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে তৃণমূল।
যেই কারণে পড়শি রাজ্য ত্রিপুরার পাশাপাশি এবার সুদূর গোয়াতেও নিজেদের সংগঠন বাড়াতে মরিয়া তৃণমূল বাহিনী। যদিও, ত্রিপুরার নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হলেও এবার গোয়াকেই “পাখির চোখ” করছেন তৃণমূল নেতৃত্বরা।
আর কিছু মাস পরেই গোয়ায় নির্বাচন। এতদিন গোয়ায় তৃণমূলের ইন-চার্জ হিসেবে একা হাতে সমস্ত দায়িত্ব সামলেছেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তবে, এবার মহুয়া আর একা নন। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুষ্মিতা দেব এবং আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীকে গোয়ায় তৃণমূলের কো-ইন-চার্জ পদে বসালেন মমতা।
আর এই ঘটনার পরেই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। এমনিতেই গত ডিসেম্বরে নদীয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী সবার সামনে ধমক দেন মহুয়া মৈত্রকে। তিনি বলেছিলেন, “মহুয়া এখানে আমি একটা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, কে কার পক্ষে বিপক্ষে দেখার আমার দরকার নেই।” এরপরেই প্রাথমিকভাবে অনেকেই মনে করছিলেন যে, প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করেই কোনো জটিলতা রয়েছে দলের অন্দরে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যতেও তা স্পষ্ট হয়ে যায়।
সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এবার গোয়ায় মহুয়ার একচ্ছত্র অধিকারে ভাগ বসানো হল কিনা তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় আসলে মহুয়ার একপ্রকার “ডানা ছাঁটা” হল বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
যদিও, অনেকে আবার পূর্বের একটি ঘটনাকে উপস্থাপিত করে এটি তার ফল বলেও মনে করছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২ ডিসেম্বর দেশের অন্যতম সফল শিল্পপতি গৌতম আদানি মমতার সঙ্গে দেখা করে বেশ খানিকক্ষণ বৈঠক করেন। কিন্তু, এই সাক্ষাতের প্রায় সপ্তাহখানেক পরেই টুইটারে রীতিমতো ঝড় তোলেন মহুয়া। বেআইনি মালিকানাকে বৈধ করতে চাইছে বলে আদানিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে সেবিকে চিঠি লিখেছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ৷ সেই অভিযোগপত্রের প্রথম পাতাটি টুইটারে তুলেও ধরেছিলেন তিনি। আর সেই কারণেই মমতা মহুয়ার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে ছিলেন বলেও মনে করছেন অনেকে।
এদিকে, গোয়ায় লিয়েন্ডার পেজ, নাফিসা আলির মতো ব্যক্তিত্বরা তৃণমূলে নাম লেখালেও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে দল ছেড়েছেন গোয়ার প্রাক্তন বিধায়ক সহ মোট পাঁচজন। ধর্মের ভিত্তিতে গোয়াকে ভাগ করার অভিযোগে তৃণমূল ত্যাগ করেন তাঁরা। এদিকে, এই ভাঙ্গন রোধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। যে কারণে নিজেদের সংগঠনের প্রতি আগে জোর দিতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। সেই গুরুদায়িত্ব পালনেই সুষ্মিতা দেব এবং সৌরভ চক্রবর্তীদের প্রতি এবার আস্থা রাখলেন মমতা।