বাংলা হান্ট ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ দুপুরেই জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা NRC বিলের বিরুদ্ধে পথে নামতে চলেছেন৷ সিঁথির মোড় থেকে শুরু করে শ্যামবাজার পর্যন্ত চলবে তৃণমূলের এই প্রতিবাদ মিছিল৷ সূত্রের খবর দুপুর আড়াইটে নাগাদ শুরু হওয়ার কথা এই মিছিলের৷ তৃণমূল সুপ্রিমো নিজেই মিছিলেন নেতৃত্ব দেবেন৷ শুধু দলনেত্রী নয় এছাড়াও এই মিছিলে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের সকল তাবড় তাবড় নেতা নেত্রীরা৷
ইতিমধ্যেই বিজেপির এই নাগরিক পঞ্জি পদ্ধতিকে আটকাতে ও ঠেকাতে বিধানসভায় প্রস্তাব এনেছে রাজ্য সরকার৷ শুধু তাই নয় এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে বাম ও কংগ্রেস৷ খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় NRC-র প্রতিবাদে নামতে চলেছেন পদযাত্রায়৷ জানা গেছে পূর্ত দফতরের আবেদনে মমতার নিরাপত্তার জন্য রাস্তার দু ধারে ব্যারিকেড করতে টেন্ডার ডাকা হয়েছে৷ সূত্রের খবর সকাল ১০টার মধ্যে এই ব্যারিকেড লাগানোর কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া ছিল৷
প্রসঙ্গত, বিজেপির তৈরি নাগরিক পঞ্জির বিরোধিতায় এবার তৃণমূলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ আওয়াজ তুলতে চলেছে বাম ও কংগ্রেস শিবির। বিধানসভায় একজোট হয়ে প্রস্তাব পেশ করে NRC-র বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল-বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। তবে এই আলোচনা থেকে বাদ রাখা হয় বিজেপি বিধায়কদের। আজ ১২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় বৃহত্তর প্রতিবাদ মিছিল করবে তৃণমূল কংগ্রেস৷ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং নেতৃত্ব দেবেন এই মিছিলে।
প্রসঙ্গত, অসমে হিতে বিপরীত অবস্থা তৈরি হয়েছে বিজেপির, চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জির জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তিনি। অথচ গেরুয়া শিবির নিজেই এই নাগরিকপঞ্জির জোরদার দাবি জানিয়েছিল। বিজেপির এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সদ্ব্যবহার করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমনাত্মক সুরে বলেন, ”রাজনৈতিক লাভ তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল, তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে এনআরএসি বিপর্যয়।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে পোস্ট করে লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক লাভ তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল, তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে এনআরসি বিপর্যয়। দেশকে জবাব দিতে হবে তাদের। দেশ ও সমাজের স্বার্থ পরিহার করে অসত্ উদ্দেশ্যে কাজ করলে এমনটাই ঘটে।’ শুধু তাই নয় মমতা আরো বলেছেন, ‘ভাই-বোনদের জন্য খারাপ লাগছে। জাঁতাকলে পড়ে ভুগতে হয়েছে তাঁদের।’
ইতিমধ্যেই অসমে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা সমালোচনার তুঙ্গে গেরুয়া শিবির। খসড়ায় নাম ছিল না প্রায় ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষের। যদিও চূড়ান্ত তালিকাতে সে পরিমাণ কমেছে, বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ১৯ লক্ষে। কিন্তু এই এনআরসি তালিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস-বিজেপি দুপক্ষই। তারা জানিয়েছেন যে বৈধ নাগরিকরাই বাদ পড়ে গিয়েছে এই নাগরিকপঞ্জি থেকে। আর তার জায়গায় স্থান পেয়েছে বিদেশীরা।
বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মাই নিজেই প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁসা দক্ষিণ সালমারা, ধুবড়ির মতো এলাকায় অনুপ্রবেশকারী’দের বাতিলের হার সবথেকে কম। উল্টে যে সমস্ত এলাকায় প্রকৃত অসমিয়ারা বসবাস করেন, সবচেয়ে বেশি বাদ পরার সংখ্যা সেখানে। এই ঘটনা কিভাবে সম্ভব? এনআরসি নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যাথা নেই।’