অসুবিধে হয় পড়ুয়া থেকে রোগীর! তাই নিজের বিয়ের জন্য জমানো টাকা দিয়ে গ্রামে পাকা রাস্তা বানালেন যুবক

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক : গ্রামে নেই পাকা রাস্তা। ছোট স্কুল ছাত্র-ছাত্রী থেকে রোগী, এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে চরম সমস্যার মুখে পড়েন সবাই। বহুবার গ্রাম পঞ্চায়েতে এই বিষয়ে আবেদন করলেও কোন সুরাহা হয়নি। তাই নিজেই দায়িত্ব নিয়ে গ্রামবাসীদের জন্য পাকা রাস্তা তৈরি করে দিলেন গ্রামের যুবক পি চন্দ্রশেখরণ। নিজের বিয়ের জন্য জমানো অর্থ দিয়ে তিনি গ্রামবাসীদের উপহার দিলেন নতুন পাকা রাস্তা।

তামিলনাড়ুর ভিলুপুরম জেলার ভানুর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে নল্লাভুর গ্রামে বসবাস করেন চন্দ্রশেখরণ। এই গ্রামে বসবাস করেন মেরে কেটে সাড়ে তিনশ পরিবার। মোট সাতটি রাস্তা রয়েছে এই গ্রামে যাতায়াতের জন্য।চন্দ্রশেখরণের পরিবার-সহ আরও ৫০ পরিবার থাকেন ঈশ্বরন কোয়েল স্ট্রিটে। কিন্তু বহুদিন ধরেই ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাদের বাড়ির সামনের রাস্তা। সামান্য বৃষ্টি হলেই কাদায় চলতে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করতে হয় গ্রামবাসীদের। আবার কখনো এই ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয় গাড়ি।

চেন্নাইতে একটি বেসরকারি সফটওয়্যার কোম্পানিতে কর্মরত চন্দ্রশেখরণ স্বপ্ন দেখতেন তার গ্রামের বাড়ির রাস্তা পাকা হবে। রাস্তা পাকা করার উদ্দেশ্য নিয়ে বহুবার গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় রাস্তা পাকা করার মত অর্থ তাদের কাছে নেই। তারপর চন্দ্রশেখরণ সিদ্ধান্ত নেন গ্রামের রাস্তা পাকা করার জন্য তিনি নিজেই উদ্যোগী হবেন। হিসাব কষে দেখেন ২৮০ মিটার এই রাস্তা পাকা করতে খরচ হবে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মতো। তার বিয়ের জন্য জমানো পুঁজি ব্যবহার করে শুরু করেন পাকা রাস্তা তৈরীর কাজ।

একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চন্দ্রশেখরণ জানিয়েছেন,”আমি যখন প্রাথমিক স্কুলে পড়ি তখন শেষ বার আমাদের গ্রামে রাস্তা পাকা করার কাজ হয়েছিল। এরপর আমি পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজ করছি। কিন্তু এতগুলো বছরেও কোন উন্নতি হয়নি ওই রাস্তার।”

পাকা রাস্তা তৈরীর কাজের সময় হুমকির মুখেও পড়তে হয় চন্দ্রশেখরণকে। একটা সময় সরকারি আধিকারিকেরা রাস্তা তৈরির আনুমানিক খরচের অর্ধেকটা তাকে দিতে বলেন। তখন চন্দ্রশেখরণ দেখেন সরকার যে পরিমাণ টাকা রাস্তা তৈরীর জন্য বরাদ্দ করছে তা যথেষ্ট নয়। তাই তিনি নিজের জমানো পুঁজি দিয়ে শুরু করেন রাস্তা তৈরীর কাজ। প্রথমে রাস্তা তৈরীর কাজের অনুমতি পাননি তিনি। তাকে বারবার হুমকি দিতে থাকা হয় রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে। কিন্তু কোন কথা না শুনে চন্দ্রশেখরণ জুলাই মাসে ২৮০ মিটার লম্বা, ১৪ ফুট চওড়া, ১৫ সেমি পুরু পাকা রাস্তা তৈরির কাজ সম্পূর্ন করেছেন।চন্দ্রশেখরণের এক প্রতিবেশী এ এজুমালাই জানিয়েছেন, তাদের এই পাকা রাস্তা এখন অন্যান্যদের হিংসার কারণ! সব গ্রামের বাসিন্দারাই চাইছেন তাদের পাড়ায় একজন করে চন্দ্রশেখরণের মত ছেলে থাকুক।

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

X