বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলার বুকে একের পর এক দুর্নীতি মামলায় ক্রমাগত চাপ বেড়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) উপর। একইসঙ্গে দলের অন্দরে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এবার দলীয় পদ দেওয়ার নাম করে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়ের (Bimalendu Sinha Roy) বিরুদ্ধে। তবে এ মামলায় বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে উল্টে অভিযোগকারীকেই এদিন আটক করেছে পুলিশ; যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়।
তৃণমূল বিধায়ক তথা নদিয়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান বিমলেন্দু। গত শুক্রবার তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় পদ দেওয়ার নাম করে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ জানান হাসান আলি মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন তৃণমূল বিধায়ক। বর্তমানে অভিযোগকারী ব্যক্তিকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এমনকি, বিমলেন্দু সিংহ রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে সাফ মানা করে দিয়েছে প্রশাসন।
উল্লেখ্য, হাসান আলি মণ্ডল করিমপুর ২ ব্লকের বাসিন্দা। পেশায় প্রাক্তন সেনা কর্মী ওই ব্যক্তি একদা তৃণমূল বিধায়কের ‘ছায়াসঙ্গী’ হিসেবেই এলাকায় পরিচিত ছিলেন। হাসানের অভিযোগ, গত জুন মাসে দলীয় পদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকার চেয়ে বসে বিমলেন্দু সিংহ রায়। পরবর্তীতে স্ত্রী এবং বউমার গয়না বন্ধক এবং জমি বিক্রয় করার মাধ্যমে ৭ লক্ষ টাকা তৃণমূল বিধায়কের হাতে তুলে দেয় সে।
একইসঙ্গে অভিযোগকারী জানায়, “আমি টাকা দিলেও পরবর্তীতে দলীয় পদে স্থান না হলে বিমলেন্দুবাবুকে টাকা ফেরত দিতে বলি। তবে সেই সময় আমাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর পাশাপাশি খুনের হুমকি পর্যন্ত দেন তিনি। সেই জন্যই আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাই।”
যদিও যার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই বিমলেন্দুবাবু বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়ে চলেছে। আশা রাখছি, এর সঠিক বিচার হবে।”
উল্লেখ্য, এদিন তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগের ভিত্তিতে অবশেষে হাসান আলি মণ্ডলকে আটক করে পুলিশ। সম্পূর্ণ ঘটনা প্রসঙ্গে চরমে উঠেছে রাজনৈতিক পারদ। এদিন বিজেপি নেতা অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “নদিয়া জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস একের পর এক দুর্নীতি করে চলেছে। পরপর পাঁচবার কোনো বিধায়কের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ সামনে আসলো।”
অপরদিকে, কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি বলেন, “তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সামনে এসেছে, তার তদন্ত করা হবে। যদি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে দলের তরফ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”