ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েও মেলেনি চাকরি! পেটের দায়ে চায়ের দোকান খুললেন মালদার বিটেক করা ছাত্র

বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাজ্যে চাকরির অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। পড়ুয়ারা বিভিন্ন ডিগ্রি নিয়ে কলেজ থেকে পাস হয়তো করছেন কিন্তু সেই অনুযায়ী আশানরূপ চাকরি পাচ্ছেন না। তাই রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের দোকান খুলছেন তাঁরা। দোকানের নামের আগে জুড়ে দিচ্ছেন নিজেদের ডিগ্রির নাম।

এমবিএ চাওয়ালাকে এখন দেশের প্রায় সকলেই চেনেন। এমবিএ করে চাকরি না পেয়ে চায়ের দোকান দিয়েছিলেন এক যুবক। এখন তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি এ রাজ্যের হাবড়াতেও দেখা গিয়েছিল এমএ পাস ইংলিশ চাওয়ালিকে। এ বার মালদহে দেখা গেল বিটেক পাস চাওয়ালাকে (BTech Chai Wala)।

 

btech chawala

ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরি পাননি। তাই বাধ্য হয়ে চায়ের দোকান খুলেছেন কালিয়াচকের বাসিন্দা আলমগীর খান। মালদহ টাউন স্টেশনের রাস্তায় একটি ভাড়াবাড়ির বারান্দায় খুলেছেন ‘বিটেক চাওয়ালা’। এমনকী, বন্ধুদের ডেকে ফিতে কেটে উদ্বোধনও করেন। এমএ পাস চাওয়ালি হোক বা বিটেক পাস চাওয়ালা।

নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা চায়ের দোকানের নামের সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন তাঁরা। এভাবেই হয়তো নিঃশব্দে বিপ্লব করছেন হাবড়ার টুকটুকি দাস, আলমগীর খানের মতো মানুষ। হাবড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে চায়ের দোকান খুলেছিলেন টুকটুকি দাস। তিনি রবীন্দ্রভারতী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষায় ইংলিশে ফার্স্ট ক্লাস। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও চাকরি পাননি।

btech chawala

একই পথে হাঁটলেন আলমগীরও। মালদহের কালিয়াচক হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাস করেন আলমগীর খান। তারপর গনি খান ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা ও বিটেক করেন। এখানেও দু’টি ক্ষেত্রেই ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পান। কিন্তু চাকরির জন্য অনেক চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি।

বাড়িতে বাবা-মা, ভাইবোন রয়েছেন। তাঁদের নিয়ে সংসার কী ভাবে চালাবেন সেই চিন্তাতেই হতাশা গ্রাস করতে শুরু করে। একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে কাজ করতেন। কিন্তু সেখানেও আট হাজার টাকার বেশি পাননি। এই পরিস্থিতিতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছেড়ে হাতে তুলে নিলেন চায়ের কাপ। একজন বন্ধুর সঙ্গে মালদহ স্টেশন রোডে কানির মোড়ের কাছে খুললেন চায়ের দোকান। 

আলমগীরের কথায়, “চাকরি হবে না সেটা বুঝতে পারছি। কেন্দ্রের মতো রাজ্য সরকারও বেকারত্ব নিয়ে উদাসীন। বাজারে চাকরির অভাব। বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা, ভাইবোন রয়েছে। কীভাবে সংসার চালাব? খাব কী? বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাউন্সিলিং-এ চাকরি পেলেও মাইনে মাত্র ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। তাও গুজরাটে গিয়ে কাজ করতে হবে। এই টাকায় নিজেই বা খাব কী? বাড়িতেই বা কী পাঠাব?” এই পরিস্থিতির কারণেই নিজের চায়ের দোকানের সাইনবোর্ডে জুড়ে দিলেন ডিগ্রির নাম, বিটেক চাওয়ালা। 

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর