অভিনব প্রতিবাদ! আবাসের ঘর না পেয়ে পঞ্চায়েত অফিসে রান্না-বান্না করে মধ্যাহ্নভোজন সারলেন দম্পতি

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে আবাস দুর্নীতি (Awas Corruption) ইস্যুতে জেরবার রাজ্য। পাহাড়প্রমান দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে বঙ্গের মাটি। একদিকে বিত্তবানদের নামে ভরেছে যোজনার তালিকা, অন্যদিকে ন্যায্য পাওনার দাবিতে রাস্তায় নেমেছে বঞ্চিত মানুষজন। চলছে আন্দোলন-প্রতিবাদ। তবে এবার আবাসের ঘর না পেয়ে এক অভিনব প্রতিবাদ করে নজির গড়লেন শিলদার (Silda) দম্পতি। সপরিবারে হাজির স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে। সেখানেই হাঁড়ি-কড়া নিয়ে এসে রান্না করে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজন সারলেন সকলে। শুধু তাই নয়, আবাস যোজনার বাড়ি না পাওয়া পর্যন্ত পঞ্চায়েত অফিসেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানালেন দম্পতি।

অভিনব এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) বেলপাহাড়ি ব্লকের শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতে। জানা গিয়েছে, শিলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা মণিকাঞ্চন দত্ত আবাস যোজনায় বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন। এরপর আবাস যোজনার তালিকায় দেখেন তাঁর পাকা বাড়ি আছে! খোঁজ খবর নিতে জানা যায়, স্থানীয় তৃণমূলের (TMC) প্রাক্তন বুথ সভাপতি পঞ্চানন দত্তের নামে পাকা বাড়ি হচ্ছে। অথচ নাম রয়েছে তাঁর। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মণিকাঞ্চন।

আরও কী জানা যাচ্ছে? মণিকাঞ্চনের অভিযোগ, ‘‘আমার নামে আবাস যোজনার বাড়ির টাকা তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি পঞ্চানন দত্ত এগজিকিউটিভ অফিসারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকিয়ে নিয়েছেন। তিঁনি এখন বাড়িতে এসি লাগিয়েছেন আমার টাকায়! আমি আছি ভাঙা ঘরে। ও ভাবে বসবাস করা যায় না। তাই তাই এখানেই এখন থাকব আমি।’’

তিঁনি আরও বলেন, ২০১৭-২০১৮ যখন যোজনার তালিকা তৈরি হয় সেখানে প্রভাব খাটিয়ে মণিকাঞ্চনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এর পরিবর্তে নিজের নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের জুড়ে দেন তৃণমূলের পঞ্চানন দত্ত। এরপর আবাস যোজনার টাকাও সেই নেতার নামেই আসে । এই নিয়ে অভিযোগকারী পঞ্চায়েত প্রধান দ্বারস্থ হলে তিঁনি সাহায্য করেননি বলে অভিযোগ। তবে পরে পঞ্চায়েতের বৈঠকে ঠিক হয়, তৃণমূলের ওই নেতা মণিকাঞ্চনকে তাঁর যোজনার ঘরের টাকা ফিরিয়ে দেবেন। সেই আশ্বাসে মণিকাঞ্চন পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরির করলে প্রথম অবস্থায় কিছু টাকা দেওয়া হলেও পুরো টাকা দিতে ওই তৃণমূল নেতা অস্বীকার করেছেন বলে অভিযোগ। এরপর আর কোনো উপায় না পেয়ে শেষমেশ মঙ্গলবার পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েই বসবাস শুরু করেন মণিকাঞ্চন ও তাঁর পরিবার।

pmay

অপরদিকে এ নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের দাবি , ‘‘আমি পঞ্চানন দত্তকে ডেকে পাঠিয়েছি। উনি এলে বিষয়টির সুরাহা হবে। এর আগে অঞ্চল অফিসে বসে আলোচনা করে স্থির হয় যে, আবাস যোজনার বাড়ির টাকা পঞ্চানন দত্ত কিস্তি মারফত মণিকাঞ্চন দত্তকে ফিরিয়ে দেবেন। ৫৭ হাজার টাকা পর্যন্ত ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা দিয়ে মণিকাঞ্চন বাড়ির কিছুটা অংশ নির্মাণ করেছেন।’’

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর