বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: সকলেই এই কথা জানেন যে ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (UCL) প্রতিযোগিতাটি ইউরোপা লিগ (UEL) প্রতিযোগিতার থেকে গুণগত মানের দিক দিয়ে অনেক বেশি উন্নত। সাধারণত বড় ইউরোপিয়ান লিগের সেরা দলগুলি সুযোগ পায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার। লিগের মধ্যমেধার দলগুলি যোগ্যতা অর্জন করে ইউরোপা লিগের। কিন্তু গতকাল ক্যাম্প ন্যু-তে ইউরোপা লিগের রাউন্ড অফ ৩২-এর বার্সেলোনা (FC Barcelona) বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড (Manchester United) ম্যাচটি দেখে ইউরোপা লিগের ফুটবলের গুণাগত মান সম্পর্কেও অনেকের ধারণা বদলে যেতে পারে।
গত মরশুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নিজেদের সেরা ফর্মের ধারে কাছে ছিল না। একাধিকবার কোচ বদল, ডিফেন্সের প্রতি ম্যাচে জঘন্য পারফরম্যান্স, তারকা ফুটবলারদের ফর্ম হারানোর মাঝে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ব্যক্তিগত দক্ষতায় কিছু ম্যাচ বার করে দেওয়ার কারণে তারা অন্তত ইউরোপা লিগের যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছিল। অপরদিকে বার্সা গত মরশুমে কোনওরকমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যোগ্যতা অর্জন করলেও এইবার তারা গ্রুপ পর্বে তৃতীয় হয়ে ইউরোপা লিগে নেমে এসেছে।
যদিও দুই দলই এই মরশুমে নিজ নিজ লিগে অসাধারণ ফর্মে রয়েছে। বার্সেলোনা বেশ কিছু পয়েন্টের ব্যবধানে লা লিগায় এক নম্বরে রয়েছে। সেই সঙ্গে জাভের কোচিংয়ে প্রথম ট্রফি হিসেবে স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতে নিয়েছে তারা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শুরুটা খারাপ করলেও এই মুহূর্তে তারা লিগ জয়ের লড়াইয়ে চলে এসেছে। নতুন কোচ এরিক টেন হাগ নিজের পছন্দমত কিছু প্লেয়ার এনে ধীরে ধীরে দলটিকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে আসতে পেরেছেন।
আর গতকাল দুই দলের মধ্যে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখা গেল তা হার মানাবে যে কোনও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচকেও। প্রথমার্ধ থেকেই একে অপরের ওপর আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই প্রতিপক্ষ। দুই পক্ষকে সাধারণত এর আগে আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বিভিন্ন পর্বেই একে অপরের মুখোমুখি হতে দেখেছি। সেখানে তারা যে ফুটবল উপহার দিয়েছে তেমনটাই গতকালও দেখা গেল। প্রথমার্ধ থেকেই বার্সা গোলরক্ষক টার স্টেগান এবং ম্যান ইউ গোলরক্ষক একাধিকবার দুর্দান্ত সেভ করে দলকে লড়াইয়ে রাখছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলা জমে ওঠে যখন মার্কোস অ্যালান্সোর গোলে বার্সেলোনা ৫০ মিনিট নাগাদ এগিয়ে যায়। কিন্তু তার তিন মিনিটের মধ্যে সমতা ফেরান মার্কাস র্যাশফোর্ড। তার আরও তিন মিনিটের মধ্যে তার দুর্দান্ত রান থেকেই ওউন গোলে এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। এরপর যখন মনে হচ্ছিল যে ক্যাম্প ন্যিউ-তে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিতে পারবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ঠিক তখনই রাফিন হার দূরপাল্লার শট জটলার মধ্যে দিয়ে নিজের গতিপথ সোজা রেখে ঢুকে যায় গোলে।
শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ২-২ ফলে শেষ হয়। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে পেদ্রি ও গাভীর মতো মিডফিল্ডারদের সাসপেনশনের কারণে পাবে না বার্সা। অপরদিকে সাসপেনশন কাটিয়ে ইউনাইটেড দলে ফিরবেন লিজান্দ্রো মার্টিনেজের মতো তারকা ডিফেন্ডাররা। ফলে ফিরতি পর্বের ম্যাচে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অ্যাডভান্টেজ ম্যান ইউ, এই কথা বলাই যায়।