বাংলা হান্ট ডেস্ক: সময় যত এগোছে ততই একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। এবার ইডির আধিকারিকদের হাতে এল আরও এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে মানিকপুত্র সৌভিক ভট্টাচার্য কনসালটেন্সি ফার্মের নাম করেই একাধিক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা তুলে নেওয়ার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। বি.ইডি, ডি.ইএল.ইডি-র মতো কোর্স করানো হয় এইরকম প্রায় ৫৩০টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কমকরে প্রায় ৫০ হাজার টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রের খবর, যেসব কলেজ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে থেকেই একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, “২০১৮ সালের পুজোর সময় ওই টাকা নেওয়া হয়। মানিকের অফিস থেকেই ফোন করে টাকা চাওয়া হয়। বলা হয়, অর্থপ্রাপকের নাম না লিখে ৫০ হাজার টাকার চেক দিতে হবে।” শুধু তাই নয়, টাকা না দিলে সমস্যায় পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়ার কথাও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তুলে ধরেন। পরে অবশ্য ‘অ্যাকিউরি কনসালটেন্সি’র নামটি প্রকাশ্যে আসে।
জানা যায়, ‘অ্যাকিউরি কনসালটেন্সি’র সঙ্গে মানিকের ছেলে আবার নিজের আর একটি সংস্থার চুক্তি করেন। বেনামি টাকা সৌভিক নিজের কাছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধার জন্য এই চুক্তিপত্র করেছিলেন বলেই মনে করছেন ইডি আধিকারিকরা। তবে, আদৌ ‘অ্যাকিউরি কনসালটেন্সি সার্ভিসেস’ ঠিক কী ধরণের কাজ করত সেই বিষয়ে কোন স্পষ্ট তথ্য এখনও পর্যন্ত ইডির আধিকারিকদের হাতে এসে পৌঁছায় নি। পাশাপাশি, যথেষ্ট বিবরণ না থাকার জন্য সংস্থার ওয়েবসাইটটি সম্পর্কেও নানা ধন্দ তৈরী হয়েছে। তবে, ওই সংস্থার অধীনে থাকা তিনটি কমিটির সঙ্গে যুক্ত তিনজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে জেলা করা হবে বলেই সূত্রের খবর।
অন্যদিকে, ইডি আদালতে জনিয়েছে, ওই সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকার হদিস মিলেছে। এই বিপুল অর্থকে ৫৩০টি কলেজ থেকে প্রাপ্ত সৌভিকের টাকা বলেই মনে করা হচ্ছে । পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক বহুক্ষেত্রে টাকা নিলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোনও কাজ করেনি। এমনকি, কলেজগুলিকে টাকা ফেরত না দেওয়ার মত গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে ইডি। তবে, নিজের নামের প্রভাব ও পদের প্রতিপত্তির ‘অপব্যবহার’ করেই এমন দুর্নীতির সাথে যুক্ত হয়েছেন বলেই ওয়াকিবহাল মহলের মত।