বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যতদিন অগ্রসর হচ্ছে, ততই যেন নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতিতে অস্বস্তি ক্রমশ বেড়েই চলেছে; একের পর এক নয়া তথ্য উঠে আসায় বিপাকে শাসক দল। এর মাঝেই গত কয়েকদিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya) ইস্যুতে তোলপাড় বাংলা। সিবিআই (CBI) এবং ইডি (ED) তল্লাশি মাঝে আচমকাই এক প্রকার গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। অবশেষে সিবিআই লুক আউট নোটিশ মাঝে প্রকাশে এলেন মানিকবাবু।
এসএসসি থেকে প্রাইমারি টেট, নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক দুর্নীতি ইস্যু বর্তমানে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলায়। সর্বত্রই দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল কংগ্রেস। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এ মামলাগুলির তদন্ত করে চলেছে সিবিআই এবং ইডি। সম্প্রতি, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিনহা এবং অশোক সাহাকেও গ্রেফতার করে সিবিআই। ইতিমধ্যে শিক্ষার সঙ্গে জড়িত আরো বেশ কয়েকজন আধিকারিকরাও নজরে রয়েছে তদন্তকারী অফিসারদের।
তবে এর মাঝে আবার মানিক ভট্টাচার্যকে নিয়ে শুরু হয়েছে বিস্তর জল্পনা। সিবিআই এবং ইডির তল্লাশি মাঝে আচমকাই এক প্রকার গায়েব হয়ে যান মানিকবাবু। দীর্ঘ কয়েক দিন ধরে জল্পনা মাঝে অবশেষে গতকাল প্রকাশ্যে এলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন এই সভাপতি। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে এক প্রকার খোঁজ মেলেনি মানিক ভট্টাচার্যর। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালিয়েও তাঁর খোঁজ না পেয়ে অবশেষে লুক আউটনোটিশ জারি করেছে সিবিআই। শুধু তাই নয়, একইসঙ্গে তদন্তে নেমে পড়েছে ইডি অফিসাররা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে আইনি পরামর্শ নিতে কলকাতা হাইকোর্টে উপস্থিত হয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বর্তমানে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে চলেছে। ২০১৭ সালে টেট পরীক্ষায় যে তালিকা বের করা হয়, সেটি ঘিরেই একের পর এক প্রশ্ন চিহ্ন উঠে এসেছে। তালিকায় ২৬৯ জনের চাকরি কি করে হয়েছে, সেই বিষয়টিকে সামনে রেখেই তদন্ত করে চলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এ মামলায় অতীতেই সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন মানিক ভট্টাচার্য। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পরেও অবশ্য সদুত্তর মেলেনি বলে খবর। এর মাঝেই গত জুন মাসে কলকাতা হাইকোর্ট পর্ষদ সভাপতির পদ থেকে বরখাস্ত করে মানিকবাবুকে। পরবর্তীতে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়লেও গত কয়েকদিন ধরেই মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে কোনো রকম ভাবেই যোগাযোগ করতে পারেনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এমনকি তলব করা হলেও হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি।
তবে বর্তমানে হাল ছাড়তে নারাজ তদন্তকারী অফিসাররা। একদিকে যেমন সিবিআই লুক আউট নোটিশ জারি করেছে, আবার অপরদিকে ইডি আধিকারিকরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এর মাঝে গতকাল অবশেষে প্রকাশ্যে এলেন মানিক ভট্টাচার্য। ফোনে বার্তালাপের সময় তিনি জানান, “আমাকে যখন যার দ্বারা যেখানে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে, সেখানেই থেকেছি।” একই সঙ্গে গায়েব হওয়ার ব্যাপারটিকে সম্পূর্ণরূপে নাকচ করেন তিনি। তবে পরবর্তী সময়ে সিবিআই এবং ইডির তলব মাঝে মানিকবাবু শেষ পর্যন্ত হাজিরা দেন কিনা, সেটাই দেখার।