বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রদান করতে হবে টেটের (Primary Tet) ফাঁকা উত্তরপত্র। পরীক্ষার্থীদের সই করা ফাঁকা উত্তরপত্র এভাবেই চেয়ে পাঠানোর নির্দেশ দিতেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। শুধু তাই নয়, এ ক্ষেত্রে প্রতিটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানদের জোর করা হতো বলে দাবি ইডির (Enforcement Directorate) আর এবার এই সকল ইস্যুকে সামনে এনেই মানিককে নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে তদন্তকারী সংস্থা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। এক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অন্যান্য শিক্ষা আধিকারিকদের পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্যের বড়সড় ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি তদন্তকারী সংস্থার আর এবার এই মামলায় আবারও একবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করল তারা।
ইডির দাবি, টেটের ফাঁকা উত্তরপত্র পাঠানোর জন্য প্রতিটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষার সংসদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দিতেন মানিকবাবু। এক্ষেত্রে তাদের প্রশ্ন, কার সাহায্যে এত বড় চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিষয়ে তদন্তকারী সংস্থার নজর রয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে।
সূত্রের খবর, প্রাথমিক টেটের ফাঁকা উত্তরপত্র প্রসঙ্গে এখনো পর্যন্ত মুখ খোলেননি মানিক ভট্টাচার্য। এক্ষেত্রে অতীতেও তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতা করার অভিযোগ আনে ইডি আর এবার পুনরায় একবার সেই অভিযোগই তুলল তারা। তবে হার মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এক্ষেত্রে মানিকের পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অনেককেই জেরা করতে চলেছে তারা, এমনটাই সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে।
কি অভিযোগ মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে? মানিকের তরফ থেকে প্রতিটি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয় যে, তারা পরীক্ষার্থীদের সই করা ফাঁকা উত্তরপত্র যেন মানিকের দপ্তরে পাঠায়। এক্ষেত্রে সেই সকল ফাঁকা উত্তরপত্র নিজের কাছে রাখার পাশাপাশি পরবর্তীতে সেখানে নিজের ইচ্ছে মত নম্বর বসানোর বন্দোবস্ত করতেন মানিকবাবু। একইসঙ্গে এরপর সেই সকল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে তাদের চাকরি প্রদান করা হতো বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে অতীতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও জেরা করে তদন্তকারী সংস্থা। তবে এক্ষেত্রে কোন সদুত্তর দেননি পার্থ এবং বর্তমানে এই বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন মানিকবাবুও। তবে ইডির দাবি, এই দুর্নীতিতে মানিক ভট্টাচার্য ছাড়াও অন্যান্য একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হাত রয়েছে, নাহলে তাদের নির্দেশ ছাড়া কখনোই একার পক্ষে এহেন বড়সড় দুর্নীতি করা সম্ভব ছিল না মানিকের পক্ষে! এখন দেখার, এই মামলায় শেষ পর্যন্ত নয়া কোন সূত্র হাতে পায় ইডি।