বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে উত্তাল বঙ্গ। শিক্ষক কেলেঙ্কারি মামলায় জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে। শুক্রবার প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির (Primary Recruitment Scam) মামলায় নজিরবিহীন নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। আদালতের নির্দেশে ২০১৬ সালের প্যানেল থেকে এক ধাক্কায় ৩৬ হাজার স্কুল শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ নিয়ে একদিকে যেমন হাজারো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তেমনি এরই মধ্যে তার সেই আশঙ্কা যে সত্যি, সেই কাহিনী সামনে আনলেন প্রাথমিকের ইন্টারভিউর দায়িত্বে থাকা এক প্রাক্তন শিক্ষক অধুনা ওষুধ ব্যবসায়ী। পাশাপাশি আদালতের রায় সঠিক পথে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের নাম নিত্যানন্দ পাল। এদিন এক সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, ১৯৮৬ সালে চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। ২০১২ সালে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। সেই সময় তৃণমূলের শিক্ষক সেলের দার্জিলিং জেলার দায়িত্বে ছিলেন নিত্যানন্দবাবু। প্রাক্তন শিক্ষক হওয়ার সুবাদে তাকে ইন্টারভিউ বোর্ডে রাখা হয়। তবে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে তিনি জানান তার ওপরে যে ৬০ – ৬২ জনের ইন্টারভিউ নেওয়ার ভার ছিল তাদের কারও প্রশিক্ষণ ছিল না।
তার কথায়, ” আমরা জানতাম, প্রশিক্ষণ থাকা বাধ্যতামূলক। এক জন প্রার্থীর ইন্টারভিউ নিতে ৫ – ৬ মিনিট লেগেছে। অ্যাপটিটিউড টেস্টের জন্য চক – ডাস্টার ব্ল্যাক বোর্ড যাবতীয় যা সব লাগে। সেসব কিছুই ছিল না। কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়নি। “
এখানেই শেষ নয়, এরপরই বড়সড় বোমা ফাটান সেই পরীক্ষক। তিনি বলেন, “যেদিন ইন্টারভিউ হয়েছিল সেদিন সেই জেলাতেই ছিলেন পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)। পরীক্ষা শেষে তিনি পরীক্ষাকেন্দ্রে এসে আমি সহ অন্যান্য পরীক্ষকদের কাছ থেকে নম্বর লেখা কাগজগুলো তিনি নিয়ে যান।”
তার কথায়, “যেই সেই কাগজ জমা পড়ার কথা ছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে’, আশ্চর্যভাবে তা মানিকবাবু নিয়ে যান।” নিত্যানন্দবাবুর আশঙ্কা এভাবে অনিয়ম করেই চলত দেদার চাকরি বিক্রি। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় এজেন্সি ডাকলে তিনি হাজিরা দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন।