বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত এপ্রিল মাসে শেষবারের মতো ফিরেছিলেন বাড়ি। কথা দিয়েছিলেন, পুজোর আগেই বাড়ি ফিরে সকলের সঙ্গে দেখা করবেন। সেই কথা তিনি রাখলেন, তবে বর্তমানে বাড়িতে ফিরবে তাঁর নিথর দেহ! এমনটা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। কিন্তু বর্তমানে এহেন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার সাক্ষী থাকলো সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার। সম্প্রতি মণিপুরে ভূমিধসের কারণে মৃত্যু হয়ে বহু মানুষের। শ্রমিকের পাশাপাশি একাধিক সেনা জওয়ান মৃত্যুবরণ করে আর তাদের মধ্যে একজন ছিলেন উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁর বাসিন্দা সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১১ জার্সি ১০৭ ব্যাটেলিয়নে কর্মরত এই সেনা জওয়ানের মৃতদেহ ফিরছে বাংলায়। ১৫ বছর ধরে দেশকে সেবা করা সন্তুর যে এভাবে মৃত্যু হবে, তা কল্পনা করতে পারেনি কেউ। মাত্র ছয় মাস পূর্বেই মণিপুরের টু-পুলে পোস্টিং দেওয়া হয় সন্তু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। গত এপ্রিল মাসে তিনি বনগাঁর বাড়িতেও ফেরেন। পরিবারকে কথা দিয়েছিলেন যে পুজোর আগে পুনরায় একবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি আসবেন। কিন্তু তার অনেক আগেই ফিরলেন তিনি! অথচ স্বশরীরে নয়, কফিনবন্দি হয়ে ফিরছে তাঁর দেহ।
স্বামীর মৃত্যুতে এলাকাবাসী থেকে শুরু করে পরিবারের সকলেই শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন। স্বামীর মৃত্যু প্রসঙ্গে সন্তুর স্ত্রী বলেন, “বুধবার আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল। কিন্তু আচমকা এই ঘটনা ঘটে যাবে, তা কল্পনা করতে পারিনি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “সন্তু ছেলে হিসেবে খুব ভালো ছিল। সকলের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল ওর। ছোটবেলা থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগদান করার স্বপ্ন দেখে চলেছিল। এরপর কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে সুযোগও পায় ও। নতুন বাড়িতেও থাকার স্বপ্ন ছিলো। কয়েক মাস পূর্বে টু-পুলে পোস্টিং হয় সন্তুর। তবে ভূমিধসের কারণে যে ওর এভাবে মৃত্যু হবে, তা কখনো কল্পনাই করা যায়নি।”
উল্লেখ্য, গত বুধবার মণিপুরের টু-পুলে ভূমিধসের কারণে কাদামাটিতে আটকে পড়ে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। সেখানে কর্মরত শ্রমিক সহ সেনা জওয়ানরাও মৃত্যুবরণ করে। ইতিমধ্যেই ৮১ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। এরমাঝেই ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এটা আমাদের রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়। এই ঘটনায় ৮১ জন মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বহু শ্রমিক সহ সেনা জওয়ানের মৃতদেহ রয়েছে। এখনো পর্যন্ত ৫৫ জন মানুষ আটকে রয়েছে। তবে লাগাতার দুর্যোগের কারণে তাদের উদ্ধার করতে অনেকটা সময় লেগে যেতে পারে।”