বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রতিটি মানুষকেই তাঁদের জীবনে একটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যদিও, তাঁদের মধ্যে থেকে অল্পসংখ্যক ব্যক্তিই কঠোর পরিশ্রম এবং মনের জোরকে সম্বল করে তৈরি করেন এক অনন্য উত্তরণের কাহিনি (Success Story)। যা অনুপ্রাণিত করে বাকিদেরকেও। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এমন একজন লড়াকু নারীর প্রসঙ্গ আপনাদের সামনে উপস্থাপিত করব যিনি ইতিমধ্যেই এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যা জানার পর অবাক হবেন সকলেই!
মূলত, আজ আমরা মনীষা রুপেতা (Manisha Rupeta)-র বিষয়ে আপনাদের জানাবো। যিনি পাকিস্তানে একজন হিন্দু নারী হয়ে প্রথমবারের মতো ডিএসপি (Deputy Superintendent of Police) হয়েছেন। সিন্ধু পাবলিক সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হয়ে ডিএসপি পদে নিজের কাজ শুরু করেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, মনীষা পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের জাকুবাবাদের বাসিন্দা। যেটি খুবই পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে বিবেচিত হয়। যদিও, মনীষা তাঁর কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ইতিহাস তৈরি করেছেন।
১৩ বছর বয়সে বাবা মারা যান: বিবিসির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, মনীষা তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা জাকুবাবাদ থেকেই সম্পন্ন করেছেন। যদিও, তিনি মাত্র ১৩ বছর বয়সেই তাঁর বাবাকে হারান। যার ফলে একদম ছোট থেকেই তাঁকে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছিল। এমতাবস্থায়, তিনি সাহস না হারিয়ে তাঁর লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন।
জানা গিয়েছে, বাবার মৃত্যুর পর মনীষার মা তাঁকে করাচিতে নিয়ে চলে আসেন। যেহেতু, জাকুবাবাদে শিক্ষার মান খুব একটা ভালো ছিল না তাই পড়াশোনার সুযোগ-সুবিধা করাচিতে বেশি থাকায় তাঁর মা এহেন সিদ্ধান্ত নেন। এরপর, স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে মনীষা ডাক্তারি পড়তে গেলেও তিনি চাইছিলেন পুলিশ হতে।
এমনকি, একটা সময়ে পুলিশে চাকরি করা তাঁর স্বপ্ন হয়ে দাঁড়ায়। এমতাবস্থায়, মনীষার পরিবার তাঁর ইচ্ছেতে ঠিকমতো সায় দিচ্ছিলনা। যদিও, শেষ পর্যন্ত মনীষা পুলিশ অফিসার হওয়ার সিদ্ধান্তই নেন। পাশাপাশি, তাঁর পরিবারের সদস্যরাও এই সিদ্ধান্তকে পরে সমর্থন করেন। আর তারপরেই পরীক্ষায় পাশ করে মনীষা তাঁর স্বপ্ন পূরণ করেন। এদিকে, পাকিস্তানের প্রথম হিন্দু মহিলা ডিএসপি হিসেবে কাজ শুরু করার পর মনীষার পাশাপাশি খুশি হয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও।