বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশে (Bangladesh) শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) সরকারের পতন হওয়ার পর থেকেই ক্রমশ বেড়ে চলেছে অশান্তি। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই ভিটেমাটি ছেড়ে পাকাপাকিভাবে চলে আসতে চাইছেন এপার বাংলায়। খবর মিলেছে বাংলাদেশের জেল থেকেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে শতাধিক জঙ্গিকে। ভারতে (India) এসে তারা নাশকতার জাল বিছাতে ঘাঁটি গেড়েছে একাধিক রাজ্যে।
ভুয়ো পাসপোর্ট (Fake Passport) নিয়ে সামনে এল বড় আপডেট
এই অভিযোগে ইতিমধ্যেই ৮ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে দু’জন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। এই পরিস্থিতিতে একই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভুয়ো পাসপোর্ট (Fake Passport) তৈরির সংখ্যাও। সেইসাথে পাসপোর্ট নিয়ে দিনে দিনে উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্যের গোয়েন্দাদেরও। একের পর এক সামনে আসতে শুরু করেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আগেই জানা গিয়েছে এই ভুয়ো পাসপোর্ট (Fake Passport) চক্রের পিছনে যোগসূত্র রয়েছে পোস্ট অফিসের। আর এবার আঁতশ কাঁচের নিচে আধার সেবা কেন্দ্র-ও। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান করছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তাদের তদন্তেও উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, পাসপোর্টের আবেদনপত্রের সঙ্গে আধার কার্ডের যে ফটোকপি জমা দেওয়া হয়েছিল সেই আধার কার্ড গুলি বানানো হয়েছিল সেগুলির বয়স মাত্র কয়েক মাস। কিন্তু যাচাইয়ের সময় দেখা যায় সংশ্লিষ্ট আধার কার্ডে যার নাম রয়েছে সেই নামের কোন অস্তিত্বই নেই।
অথচ তার ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা ইউআইডির সাথে মিলে যাচ্ছে জমা দেওয়া আধার কার্ডের ফটোকপি। যা থেকে তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন এই কাজে নিশ্চয়ই আধার সেবা কেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের হাত রয়েছে। তা না হলে এই কাজ করা সম্ভব হতো না। যদিও সমস্ত নথি এবং তথ্য হাতে আসার পরেই পুরো বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে বলেই জানাচ্ছেন তারা।
তদন্ত থেকে জানা যাচ্ছে ভুয়ো পাসপোর্ট (Fake Passport) চক্রের সদস্যদের সাহায্য নিয়েই বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে প্রবেশ করতেন ভারতীয় পাসপোর্টের অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশিরা। গোয়েন্দা সূত্রে খবর এই চক্রের মূল পান্ডা সমরেশ বিশ্বাসের হাত ধরে শেষ পাঁচ বছরে প্রায় তিন হাজার ভুয়া ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এই পাসপোর্ট চক্রের জাল ছড়িয়েছিল উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদীয়ার মত জেলাগুলিতে।
আরও পড়ুন: বড়দিনের আগেই কলকাতাবাসীর জন্য বিরাট উপহার! এই রাস্তার নতুন নাম দিলেন মমতা
এই তবে এই সমারেশ বিশ্বাসকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য মিললেও তিনি নাকি বিভিন্ন সময়ে পুলিশদের বিভ্রান্ত করছেন বলেই বলেই জানা যাচ্ছে। এছাড়া জানা যাচ্ছে যে চক্র পাসপোর্ট তৈরি করছিল তারা সবাই বাংলাদেশের। তাই তারা যে বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে সে কথাটা একপ্রকার স্পষ্ট। পুলিশ সূত্রে খবর প্যাকেজ সিস্টেমে বাংলাদেশিরা ভুয়ো পরিচয় পত্র নিয়েই দেশে প্রবেশ করতো।
পরে ওই পরিচয় পত্র জমা দিয়ে তৈরি হতো পাসপোর্ট, ভিসা, কিংবা ব্যাংকের জাল নথি। ওই সমস্ত নথি দিয়েই বাংলাদেশীদের পাঠানো হতো বিদেশে। এই চক্রে এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে সমরেশ বিশ্বাস এবং দীপঙ্কর মন্ডলকে শুক্রবার আবার আদালতে তোলা হয়েছিল। জানা যাচ্ছে, এদের সঙ্গে ওই ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। বিচারক তাদের আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশে হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এই দুজনের সাথে যোগাযোগ রেখে চলা ব্যক্তিকে এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।