স্বাস্থ্যসাথীর নামে নিরক্ষরদের সই চুরি করে শয়ে শয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট! অনুব্রত মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়

বাংলা হান্ট ডেস্ক : আজই অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) ফের ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজত হয়েছে। এরই মধ্যে অনুব্রত বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেল তদন্তকারী সংস্থা। প্রথমে ১৭৭ ও পরে ৫৪টি অ্যাকাউন্টের পর আবারও শুক্রবার নতুন করে ১১৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেল সিবিআই (CBI)। গরু পাচারের টাকা হাওলা করার জন্য এই অ্যাকাউন্টগুলি বাফার অ্যাকাউন্ট হিসাবে ব্যবহার করা হত বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য আসানসোল আদালতের কাছে পেশ করা হয়।

এদিন সিবিআইয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে এখনও পর্যন্ত মোট ১৬ জনকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, অ্যাকাউন্টগুলি তাঁদের খোলা নয় এবং ওই অ্যাকাউন্টে থাকা টাকাও তাঁদের নয়। এদিন বিচারক জানতে চান, কীভাবে অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়? এর জবাবে সিবিআই জানায়, দু’দিনের মধ্যেই অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছে। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের দাবি, তিনি শুধুমাত্র সই করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপে এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। সমবায় ব্যাঙ্কগুলির অ্যাকাউন্ট থেকে যে টাকা ঘুরপথে অনুব্রত মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল, সেখানে আবার জড়িয়ে রয়েছে সেই রাজীব ভট্টাচার্যের নাম। এই রাজীব ভট্টাচার্যই অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ৬৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

anubrata cbi

সিবিআই আদালতে আরও জানায়, যাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয় তাঁরা এই সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানতেন না। সংবিধানের ১৬১ ধারা অনুযায়ী নেওয়া একটি জবানবন্দিও আদালতে পেশ করা হয় বলে জানা যাচ্ছে। স্বাস্থ্যসাথীর মতো সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করেই বাসিন্দাদের কাছ থেকে নথি সংগ্রহ করা হয়েছিল। যা দিয়েই খোলা হয় ওই সমস্ত অ্যাকাউন্ট। ওই ১৬ জন অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের মধ্যে ১২ জন শুধুমাত্র টিপ সই দিয়েছেন। তাঁরা কিছুই এ বিষয়ে জানতেন না। অন্যদিকে অনুব্রতকে জেলে জেরা করার জন্য আবেদন করে সিবিআই।

প্রসঙ্গত, আজ শুক্রবার সকাল ১১ টা নাগাদ আসানসোল জেল থেকে সিবিআই আদালতে তোলা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। পরনে সাদা পাঞ্জাবি, সাদা পাজামা। গায়ে শাল, মাথায় টিকা। কিন্তু মুখে উদ্বের ছাপ স্পষ্ট ছিল। এদিন আদালতে ঢোকার সময়ে বীরভূমের কোর কমিটি নিয়ে বারবার জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি সংবাদমাধ্যমকে কোনও উত্তর দেননি।

শুধু কেষ্ট নয়, তাঁর সাগরেদ সায়গল হোসেনের সম্পত্তি নিয়েও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশয়ে আসছে। সেহেগলের যেসব সোনা এবং রূপার অলঙ্কার বাজেয়াপ্ত করা হয়, সেই ৪৪টি জিনিসের কেন আলাদা তালিকা তৈরি করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন করেন বিচারক। আগামী শুনানির দিন তার তালিকা সিবিআই-কে জমা করতে বলা হয়।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর