বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার পূর্বে বাংলায় নিজেদের সংগঠনকে মজবুত করে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) উদ্দেশ্যে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে তৎপর ভারতীয় জনতা পার্টি (Bharatiya Janata Party)। তবে এর মাঝেই একদিকে যখন একের পর এক নেতা-মন্ত্রীরা দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করে চলেছেন, আবার অপরদিকে দলের অন্দরে বিদ্রোহের আগুন অব্যাহত আর এবার এ ঘটনার সাক্ষী থাকলো বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কেন্দ্র নন্দীগ্রাম (Nandigram)। শুধু বিদ্রোহই নয়, গতকাল নন্দীগ্রামের বুকে গণইস্তফা দিয়ে বসলেন আদি বিজেপির বহু নেতা। স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়।
কি কারনে গণইস্তফা? দলত্যাগ করা বিজেপি নেতাদের দাবি, “বিজেপিতে থাকাকালীন যে সকল মানুষদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন সকলে, তারাই বর্তমানে বিজেপি চালিয়ে যাচ্ছে আর সেই কারণে দলে থাকা তাদের পক্ষে আর কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তৃণমূলে থাকার সময় শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিয়ে যারা সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করেছিল, তারাই বর্তমানে বিজেপির মাথার উপর বিরাজ করছে।” নন্দীগ্রামের বুক থেকে বর্তমানে এহেন গুরুতর অভিযোগ সামনে উঠে এসেছে।
একটি সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে দলত্যাগ করা দুই নেতা জয়দেব দাস এবং বটকৃষ্ণ দাস বলেন, “বিজেপি ছাড়তে চলেছি। তবে এখন অন্য কোন দলে যোগদান করার কথা ভাবিনি। দলের অন্দরে অনেক চোর নেতা রয়েছে। সেই কারণেই আর থাকলাম না। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যারা আমাদের নেতা কর্মীদের মারধর করার পাশাপাশি অত্যাচার করেছিল, তারাই এখন শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে দলে প্রবেশ করেছে। সেই সকল নেতারা আমাদের মত আদি নেতাদের ক্রমাগত কোণঠাসা করে চলেছে।”
একই সঙ্গে তারা বলেন, মানুষের টাকা লুট করা, তাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার মত মানুষ বর্তমানে বিজেপি চালাচ্ছে। এতে আমাদের মত নেতারা ক্রমাগত কোণঠাসা হয়ে চলেছে। সম্প্রতি জেলা সভাপতির তরফ থেকে আমাদের একটি চিঠি পাঠানো হয়, যা আমাদের কাছে অপমানজনক বলে মনে হয়েছে। দলের ভিতর এ সকল ঘটনা ঘটে চলেছে। তারপর আর থাকা যায় না।”
যদিও অপরদিকে আদি বিজেপি নেতাদের গণইস্তফা প্রসঙ্গে তমলুক জেলার বিজেপি সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সম্প্রতি দলের শৃঙ্খলা ভাঙ্গার জন্য কয়েকজন নেতাকে শোকজ করা হয়েছিল। সেই কারণেই বর্তমানে এহেন কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।” উল্লেখ্য, গত ১২ ই অক্টোবর দলীয় সভায় যোগদান না করার জন্য জয়দেব দাস এবং বটকৃষ্ণ দাসকে শোকজ করে দল। শুধু তাই না, পরবর্তী দলীয় অনুষ্ঠানেও তাদেরকে ডাকা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই কারণেই অবশেষে বিজেপি ছাড়লেন আদি নেতারা।
অতীতেও বিজেপির অন্দরে নতুন বনাম আদি নেতাদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। এক্ষেত্রে দলে নতুন আসা নেতারা পুরনোদের কোণঠাসা করে চলেছে বলে অভিযোগ উঠতে থাকে। সেই ধারা বজায় রেখে গতকাল জয়দেব এবং বটকৃষ্ণ দাস ছাড়াও শিব শংকর সাহু, অনুপ মাইতি এবং সুরজিৎ পাইকের মতো একাধিক বিজেপি নেতারা গণইস্তফা করেন।