এক তীরে বহু নিশানা! দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করে মাস্টারস্ট্রোক বিজেপির

বাংলাহান্ট ডেস্ক : দ্রৌপদী মুর্মু। গতকাল থেকেই এই নাম প্রতিধ্বনিত হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। কে এই দ্রৌপদী মুর্মু? ওড়িশার প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী তিনি। একটা সময় সেখানকার মন্ত্রীও ছিলেন। বসেছিলেন ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের আসনেও। মঙ্গলবার সন্ধ্যার বৈঠকের পরই জেপি নাড্ডা বিজেপি রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে এই তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের নেত্রীর নাম ঘোষণা করেন। যদি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী জয়লাভ করেন, তাহলে তিনিই হবেন ভারতের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি। তবে এনডিএ জোট রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মুকে সামনে রেখে রাজনৈতিক চক্রব্যুহ নির্মান করছে বিজেপি।

অদিবাসী জনজাতির এক মহিলাকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করে এক তিরে অনেকগুলি নিশানা সাধলো বিজেপি।

প্রথমত, ২০১৭ সালে বিজেপির স্লোগান ছিল ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ।’ রামনাথ কোবিন্দকে প্রার্থী করে সেই স্লোগানকেই মান্যতা দিয়েছিল বিজেপি। ২০২২-এও সেই স্লোগানকেই আরও একবার সামনে এনে নির্বাচনি ময়দানে নামতে চাইতে মোদি-শাহ জুটি।

দ্বিতীয়ত, গোটা দেশে আদিবাসী সমাজের মানুষের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি। কিন্তু সরকারি কর্মকাণ্ডে আদিবাসী সম্প্রদায়ের অংশীদারি নগন্য। তাই দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রার্থী করে আদিবাসী সমাজকেও একটা বার্তা দিল এনডিএ জোট।

তৃতীয়ত, ২০১৪ সালে আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়খণ্ডের মুখমন্ত্রী হন রঘুবর দাস। অন্যদিকে আদিবাসী সম্প্রদায়কে খুশি করতে বিজেপি রাজ্যপাল পদে বসায় দৌপদীকে। সেই গেমপ্লেনই ২০২২ এও খেলল তারা। বিজেপির দলিত নীতিকে প্রশ্নহীন করতেই দ্রৌপদী মুর্মুকে সামনে আনা হলো বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।

চতুর্থত, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ৩০ জন সাংসদের ভোট বিজেপির দিকে আসতে পারে শুধুমাত্র আদিবাসী আবেগে ভর করে। এরই সঙ্গে হেমন্ত সোরেনের সমর্থনও লাভ করতে পারে বিজেপি যা আগামী লোকসভা নির্বাচন জিততে সাহায্য করবে।

পঞ্চমত, হেমন্ত সোরেন যদি দ্রৌপদীকে সমর্থন না করে তাহলেও ক্ষতি ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চারই। গদি টলমল হয়ে উঠতে পারে ঝাড়খণ্ডে।

ষষ্ঠত, ‘দ্রৌপদী’, এই নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে হিন্দু আবেগ তথা ভারতীয় সংস্কৃতি। সারা ভারতের হিন্দু শক্তিকে এক ছাতার তলায় আনতে দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করে এক মাস্টারস্ট্রোক খেলল বিজেপি। এবং তাদের এই পরিকল্পনা ‘হিন্দু রাষ্ট্রের’ স্বপ্নকে সফল করতে আর একটি সফল পদক্ষেপ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর