বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রাণ পুরুষ (Matua Religious Leaders) গুরুচাঁদ ঠাকুর ও হরিচাঁদ ঠাকুরের নাম বিকৃত করে মতুয়া ও নমঃশুদ্র সমাজকে অপমান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই অভিযোগ তুলেই এবার মুখ্যমন্ত্রীর শাস্তি চেয়ে এবার রাজপথে মতুয়ারা (Matua Community)৷ উত্তরবঙ্গের পর এদিন উত্তর ২৪ পরগণার বারাসাত ব্যারাকপুর রোডে মাতারাঙ্গী মোড়ে ডঙ্কা, কাঁসি, নিশান নিয়ে রাস্তায় অবরোধ বিক্ষোভ করে প্রতিবাদে মতুয়া সম্প্রদায়।
ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। মালদা (Malda) জেলার গাজোলে অনুষ্ঠিত হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসাশনিক সভা। সেখানেই ঘটে বিপত্তি। মতুয়া ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম বিকৃত করে হরিচাঁদ ঠাকুরকে ‘রঘুচাঁদ’ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরকে ‘গরুচাঁদ’ উচ্চারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী, এমনটাই অভিযোগ ওঠে। এই নিয়েই আন্দোলনে সামিল মতুয়ারা।
মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কী বলেছিলেন? মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “যতদিন বড়মা বেঁচেছিলেন তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব কে নিয়েছিলেন? আমি করেছিলাম। কেউ তাকিয়ে দেখেননি। আমরা কন্যাশ্রী কলেজ করেছি। মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ, গুরুচাঁদের নামে বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে।” এখানেই গুরুচাঁদ বলতে গিয়ে ভুল উচ্চারণ করে ‘গরুচাঁদ’ বলে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঠাকুরকে গরুর সঙ্গে তুলনা করায় রেগে বোম মতুয়া সম্প্রদায়। মমতার মন্তব্যের প্রতিবাদে বুধবার থেকে বালুরঘাট সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে শামিল হয়েছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন৷ এবার সেই আন্দোলন ধরা পড়ল দক্ষিণবঙ্গেও। মুখ্যমন্ত্রীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে সামিল তারা।
উল্লেখ্য, মালদার গাজোল অঞ্চলটি মতুয়া অধ্যুষিত। ভোটারদের একটি বড় অংশ মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। সেখানেই মতুয়াদের জন্য তৃণমূল সরকার কী কী করেছেন তা তুলে ধরে বক্তৃতা রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসাশনিক সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী নামের উচ্চারণ সঠিকভাবে করছেন কিনা সেটাও জিজ্ঞাসাও করেন। সেইসময় সভায় উপস্থিত কেউ তার ভূল ধরিয়ে দেয়নি। তবে পরে এই নিয়েই সরব হয় বিরোধী দল বিজেপিও।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে শুরু জোর রাজনৈতিক তরজাও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইট করে মমতাকে চরম কটাক্ষ করেন। পাশাপাশি এই বিষয়টি নিয়ে সরব শান্তনু ঠাকুরও। মুখ্যমন্ত্রীর সেই ভাষণের ভিডিয়োটি টুইটও করে তাঁর দাবি, মমতা বন্দোপাধ্যায় ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে ধর্মগুরুর নাম উচ্চারণ করেছেন।