মহিলারা ৪৫-ই বুড়ি, পুরুষদের যৌবন থাকে ৮০ পর্যন্ত! তাই ৪টা বিয়ে করার অধিকার আছেঃ আরশাদ মাদানি

বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে সংবাদ শিরোনামে উঠে এলেন জমিয়তে উলামা-ই-হিন্দের সভাপতি ও দারুল উলুম দেওবন্দের ভাইস চ্যান্সেলর মওলানা আরশাদ মাদানি (Maulana Arshad Madani)। একদিন আগেই তিনি জোর গলায় দাবি করেন মুসলিম হয়ে তাঁরা এক দেশ এক আইন মানবেন না। তাঁদের মুসলিম পার্সোনাল ল’ই চাই। আট এদিন বহু বিবাহকে সমর্থন করে ফের বিতর্ক উস্কে দিলেন মাদানি।

কী যুক্তি তাঁর? মাদানির দাবি, মহিলাদের যৌবন শেষ হয়ে যায় মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই। কিন্তু এক্ষেত্রে পুরুষরা সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়। তাঁদের যৌবন অটুট থাকে ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত। তাই একজন মাত্র নারীর পক্ষে পুরুষের জৈবিক চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। তাই পুরুষের উচিত একাধিক বিবাহ করা।’

মাদানির এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরই তাঁকে নিশানা করেছে ভারতীয় হিন্দু পরিষদ। ভিএইচপির সভাপতি মিলিন্দ পারান্দে বলেন, ‘ওরা তো ওই কথা বলবেই। স্ত্রী জাতিকে তো মুসলিমরা বস্তুর মতো মনে করে। তাই এই কথায় অবাক হওয়ার কিছু নেই।’

একদিন আগেই ইউনিফর্ম সিভিল কোড (Uniform Civil Code) নিয়ে আইন কমিশনের নতুন পদক্ষেপের বিরোধিতা করলেন মুসলিম আলেম ও নেতারা। আরশাদ মাদানি বলেন গত ১৪০০ বছর ধরে মুসলিমরা তাদের ব্যক্তিগত আইন নিয়ে ভারতে বসবাস করে আসছে। এখন ইউসিসি আরোপের এই আগ্রহ কেন?

madani

আরশাদ পরিষ্কার জানিয়ে দেন, জমিয়তে উলামা-ই-হিন্দ আমাদের ব্যক্তিগত আইন পরিবর্তনের যে কোনও প্রচেষ্টার বিরোধিতা করবে। বিশিষ্ট মুসলিম আলেম এবং বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতারা বলেন যে ভারতের মতো একটি দেশে ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) অবাস্তব, যেখানে বেশ কয়েকটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু রয়েছে, প্রত্যেকের নিজস্ব জীবনযাত্রা রয়েছে। মুসলিম সমাজের একাংশের দাবি ইউসিসি কেবল একটি সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করবে না বরং সবাইকে প্রভাবিত করবে।

ইসলামিক সেন্টার অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য মাওলানা খালিদ রশিদ ফারাঙ্গি মাহালি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে রাজনীতিবিদরা নির্বাচনের ঠিক আগে ইউনিফর্ম সিভিল কোডের বিষয়টি উত্থাপন করেন। এবারও নির্বাচনের আগে বিষয়টি উঠে এসেছে। আমি সবসময় বলে এসেছি যে ইউসিসি কেবল মুসলমানদেরই প্রভাবিত করবে না, হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, ইহুদি, পার্সি এবং দেশে বসবাসকারী অন্যান্য ক্ষুদ্র সংখ্যালঘুদেরও প্রভাবিত করবে।’

মাহালি আরি বলেন, ‘প্রতিটি সম্প্রদায়ের প্রার্থনা, আচার-অনুষ্ঠান এবং বিয়ের মতো অনুষ্ঠান করার একটি আলাদা নিয়ম রয়েছে। সুতরাং,প্রত্যেকের ব্যক্তিগত জীবন ও নিজের বিশ্বাস ও জীবনধারা পালনের স্বাধীনতা সংবিধান দ্বারা প্রদত্ত।’

মওলানা আরশাদ মাদানী বলেন, ‘প্রায় ৯৯ শতাংশ আইন একই রকম, তবে কিছু ব্যক্তিগত আইন রয়েছে যা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা হওয়ায় সেগুলি অক্ষত থাকা উচিত। জমিয়তে উলামা-ই-হিন্দের আমরা অন্যান্য সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগত আইনকে সম্মান করি, তাই আমরা চাই সবাই আমাদের ব্যক্তিগত আইনকে সম্মান করুক। আমি মুসলিমদের মধ্যে ইউসিসি সম্পর্কে মতামত সংগ্রহ করব এবং এটি আরোপের বিরোধিতা করব।’

সমাজবাদী পার্টির সাংসদ শফিকুর রহমান বারক ইউসিসি নিয়ে নতুন করে জনমত চাওয়ার জন্য আইন কমিশনের বিরোধিতা করে বলেন, এটি কেবল দেশে ঘৃণা ছড়াবে। অল ইন্ডিয়া মুসলিম উইমেন পার্সোনাল ল বোর্ডের সভাপতি শায়েস্তা আম্বার বলেন, আমি ইউসিসির ব্লুপ্রিন্ট দেখতে চাই। ব্যক্তিগতভাবে, আমি ব্যক্তিগত আইনে কোনও পরিবর্তনের পক্ষে নই, তবে এর বিরোধিতা বা সমর্থন করার আগে আমি বিষয়টি নিয়ে মহিলাদের মতামত গুরুত্ব সহকারে নেব।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর