বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনের আগে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের জন্য খ্যাত রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। গোটা বাংলা ওনাকে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই নামেই জানেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মাত্রই বিধানসভার টিকিটও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপরই সিঙ্গুরের বিজেপি কর্মীরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে ওনার হয়ে প্রচার করবে না বলে জানিয়ে দেয়। ফল স্বরূপ মাস্টারমশাই নিজের চির প্রতিদ্বন্দ্বী বেচারাম মান্নার কাছে হেরে যান।
নির্বাচন শেষ হওয়ার তিন মাস কাটার পর এখন বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে মাস্টারমশাইয়ের। আর সেই মোহভঙ্গের কারণেই এবার তিনি সরাসরি বললেন ‘বিজেপির কাজের সঙ্গে নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারছি না। বিজেপির সংগঠন ঘুণে ধরা। আমাকে কেউ বিশেষ সম্মান দেয় না এখানে।”
শিক্ষক দিবসের দিনে মাস্টারমশাইয়ের এহেন আক্ষেপ এটাই স্পষ্ট করছে যে, উনি আর বিজেপিতে থাকতে চাইছেন না। একদা তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক থেকে রাজ্যে মন্ত্রী হওয়া রবীন্দ্রনাথবাবু হয়ত আবারও পুরনো দলেই ফিরে যেতে চাইছেন। আর সেই কারণেই শিক্ষক দিবসের দিনেই তিনি মনের কথা সামনে আনলেন।
রবীন্দ্রনাথবাবু এদিন বলেন, ‘১০ এপ্রিল সিঙ্গুরে ভোট ছিল। আর তাঁর ঠিক দুদিন আগেই বিজেপির স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি সহ সাতজন বিজেপি নেতা তৃণমূলের প্রার্থী বেচারাম মান্নার সঙ্গে গোপনে বৈঠক সারেন।” মাস্টারমশাইয়ের এই বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, ওনাকে ওনার দলের নেতা-কর্মীরাই হারিয়েছেন।
মাস্টারমশাই আরও বলেন, ‘বিজেপিতে কাজ করার কোনও সুযোগ নেই। জেলা নেতৃত্বের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই। আমাকে একবার চুঁচুড়ার একটি বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। আমি গিয়েছিলাম। এরপর আমাকে আর কেউ ডাকেনি। বিজেপিতে আমাকে সম্মান জানানোর মতো কেউ নেই।”
ওনাকে যখন প্রশ্ন করা হয় যে, তিনি কী আবারও পুরনো দলে ফিরছেন? তখন মাস্টারমশাই উত্তর দেন, ‘আর ইচ্ছে নেই।” ওনার মন্তব্যতে এটুকু বোঝা গিয়েছে যে, ৯০ বছর বয়সে তিনি এখন রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চাইছেন। তবে আদৌ অবসর নেবেন, না তৃণমূলে যোগ দেবেন, সেটা সময় বলে দেবে।