বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ এশিয়া কাপ (2023 Asia Cup) ফাইনাল শেষ হয়েছে আজই। মহম্মদ সিরাজদের (Md Siraj) দাপটে শ্রীলঙ্কাকে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়ে ২৬৩ বল বাকি থাকতেই ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়েছে রোহিত শর্মার ভারতীয় দল (Indian National Cricket Team)। মহম্মদ সিরাজের দাপটে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয়েছিল ৫০ রানে। ৬.১ ওভারে কোনও উইকেট না খুঁইয়েই ঈশান কিষাণ এবং শুভমান গিল ভারতকে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়।
গতবছর থেকে নিজের বোলিংয়ে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছেন মহম্মদ সিরাজ। তিনি ২০২২-এর শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে ভারতীয় ওডিআই দলে সুযোগ পেয়ে আসছিলেন। তার একটা কারণ অবশ্য এটাও ছিল যে তখন ভারতের মূল তারকা পেসাররা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সেই ফরম্যাট নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকায় তরুণদের বেশি করে সুযোগ দেওয়া হচ্ছিল ওডিআইতে। কিন্তু সেই সুযোগ পেয়ে দুহাতে সেই সুযোগটিকে আঁকড়ে ধরে নিজেকে ভারতীয় দলে নিয়মিত করে তুলেছেন সিরাজ।
শ্রীলঙ্কা এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বছরের শুরুতে দুটি ওডিআই সিরিজে তিনিই ছিলেন ভারতের প্রধান পেসার। শ্রীলঙ্কা সিরিজের তিনটি ম্যাচে মোট ৯টি উইকেট নিয়ে তিনি ভারতের সবচেয়ে সফলতম বোলার হয়েছিলেন ওই সিরিজের। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ খেলে তিনি নিয়েছেন ৫টি উইকেট।এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজে ৩ ম্যাচ খেলে তিনি সেবারও ৫ উইকেট নিয়েছেন।
এশিয়া কাপের ফাইনালে দুর্দান্ত বল করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মহম্মদ সিরাজ। কোনও বহুদলীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে এটি ছিল কোন ভারতীয় পেসারের সেরা বোলিং। নিজের ৭ ওভারে একটি মেডেন সহ ২১ রান দিয়ে মাত্র ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন। সেই ম্যাচের সেরার পুরস্কার হিসেবে পাওয়া অর্থমূল্য শ্রীলঙ্কার কলম্বো স্টেডিয়ামের গ্রাউন্ড স্টাফদের দান করে সকলের মন জিতে নিয়েছেন।
একসময় বিভিন্ন ছোটখাট লোকাল টুর্নামেন্টে সিরাজ খেপ খেলে বেড়াতেন। ভালো পারফরম্যান্স করলে জুটতো সামান্য কিছু পারিশ্রমিক। সেই সুবাদে বাড়ির লোকজনদের মুখে ফুটতো হাসি। বাবা অটো চালক হলেও প্রবল পরিশ্রম করে ছেলের এই ভালোলাগাটা বজায় রেখেছিলেন। ছেলের যাতে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ বন্ধ না হয় সেই জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করে রোজগার করে আনতেন।
আরও পড়ুন: গ্রাউন্ড স্টাফদের কুর্নিশ সিরাজের, দান করলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার, বিশেষ উপহার দিলো জয় শাহ-র ACC-ও
যদিও রাস্তাটা এতটা সহজ ছিল না। দু বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় নিজের প্রথম টেস্ট খেলার সময় বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েছিলেন। কিন্তু করোনার সময়কালে বায়ো বাবলের কড়া সুরক্ষার কারণে তিনি মাঝপথে ফিরতে পারেননি নিজের বাবাকে দেখতে। তারপর থেকেই যেন ক্রমাগত তার কেরিয়ারের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকা। ক্রমে ক্রমে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে এখন নিজেকে ভারতীয় পেস বোলিংয়ের প্রধান মুখ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলছেন তিনি।