“রাগ করবেন না! বিক্রীত ওষুধও নেওয়া হয় ফেরত”, এই মেডিক্যাল শপের কাহিনি চমকে দেবে সবাইকে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: একদিকে যখন ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির জেরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে কালঘাম ছুটছে সকলের, সেই অবস্থাতেই দাম বেড়েছে বিভিন্ন জরুরি ওষুধের। আর যার ফলে সরাসরি পকেটে টান পড়েছে সাধারণ মানুষের। তবে, এই আবহেই কিছু কিছু মানুষ এমন উদ্যোগ নিয়েছেন যা মন জয় করে নিছে সকলের। সম্প্রতি সেইরকমই একটি প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই সেই সংক্রান্ত একটি ছবি ভাইরালও হয়েছে নেটমাধ্যমে।

সেই ছবিতে দেখা গিয়েছে যে, একটি ওষুধ দোকানের মালিক তাঁর কাউন্টারে একটি প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে লিখে রেখেছেন যে, “এখানে বিক্রীত ওষুধও ফেরত নেওয়া হয়। আমরা আপনাকে অসন্তুষ্ট করে উপার্জন করতে চাই না।” এদিকে, ওই ওষুধ দোকানের কর্ণধারের এহেন উদ্যোগকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন সকলেই। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদরাও এই ছবি শেয়ার করেছেন।

জানা গিয়েছে, এই ওষুধ দোকানের ছবিটি হল মধ্যপ্রদেশের দেওয়াসের। পাশাপাশি, ওই দোকানের কর্ণধারের নাম হল আইয়ুব ভারতী। আইয়ুবের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছেন সবাই।

“করোনা মহামারীতে প্রকাশ্যে হয়েছে লুঠপাট”:
এই প্রসঙ্গে আইয়ুব বলেন, “মহামারীর দ্বিতীয় লকডাউনে সর্বত্র হইচই পড়ে যায় এবং মেডিকেল স্টোরের লোকজন প্রকাশ্যে লুঠপাট চালায়। এমতাবস্থায়, করোনার যে ওষুধ বাজারে ৩০ হাজারে পাওয়া যাচ্ছিল, আমি সেগুলো মাত্র ৫ হাজার টাকায় মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।”

তারপর এই মহৎ সিধান্ত নেন তিনি:
আইয়ুব আরও ব্যাখ্যা করেন, “’আমি দেখেছি বেশিরভাগ দোকানে লাগানো প্ল্যাকার্ডে লেখা থাকে “যত ওষুধ দরকার ততই কিনুন। তবে, বিক্রিত ওষুধ ফেরত নেওয়া হবে না।’ তখন আমার আদর্শ নবী মোহাম্মদ সাহাবের একটি কথা মনে পড়ল। ‘আপনি যে জিনিস বিক্রি করেছেন তা যদি গ্রাহকের উপকারে না আসে, তাহলে আপনি তা ফেরত নিয়ে নিন। আপনি তাঁকে যে টাকা ফেরত দিচ্ছেন তা আপনারই হয়েছে।’ এই কথা ভেবেই আমার দোকানের কাউন্টারে লেখাটা লিখি।”

করেন একাধিক সামাজিক কাজও:
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ওষুধ দোকান চালানোর পাশাপাশি আইয়ুব সক্রিয়ভাবে সামাজিক কাজেও অংশ নেন। “হেল্পিং হ্যান্ড” নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তিনি। যা গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করে।

আইয়ুবের মতে, “আমাদের সংগঠন দরিদ্র মানুষদের সব রকম সাহায্য করে। কোনো গরিব মানুষ অসুস্থ হলে তাঁর চিকিৎসার খরচ আমরা বহন করি। এছাড়াও, করোনা মহামারীর সময়ে আমাদের দল দরিদ্রদের রেশন দেওয়ার কাজ করেছে। আমরা হাজার হাজার পরিবারকে রেশন দিয়েছি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য সমাজসেবা।”

ভাইরাল হওয়ার প্রসঙ্গে কি বললেন তিনি?
আইয়ুবের এই মহতী উদ্যোগ ইতিমধ্যেই তুমূলভাবে ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আমি আনন্দিত যে এই সিদ্ধান্তে মানুষ প্রভাবিত হচ্ছেন। আমি আমার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলাম। সেই পোস্ট যে এত ভাইরাল হয়ে যাবে তা আমি নিজেও জানতাম না।”


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর