বাংলাহান্ট ডেস্ক: তীব্র আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে আরও অবস্থা খারাপ হচ্ছে পাকিস্তানের (Pakistan)। বিদেশি মুদ্রার ঘাটতির জন্য আমদানি প্রায় বন্ধের পথে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রে। এর ফলে দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যার ফলে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। খাবারের পাশাপাশি ওষুদেরও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু জীবনদায়ী ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না পাকিস্তানে। এর ফলে খুবই সমস্যায় পড়েছেন পাকিস্তানের আমজনতা।
দেশের ওষুধের দোকানগুলি থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে জীবনদায়ী ওষুধগুলি। ক্যানসারের মতো জটিল রোগের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না পাকিস্তানে। অবস্থা এতটাই গুরুতর আকার নিয়েছে যে হাসপাতালগুলিতে অস্ত্রোপচারও করা হচ্ছে না। পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে অস্ত্রোপচারের তারিখ। রোগীকে অজ্ঞান করার অ্যানাস্থেশিয়ার জোগান একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ফলে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে অস্ত্রোপচার।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি অথোরিটির বিতর্কিত মূল্য নীতির কারণেও ওষুধের এই ঘাটতি দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানি মিডিয়া আব্দুল মান্নান নামক এক ওষুধ বিক্রেতা ও জৈব পণ্যের আমদানিকারীর বক্তব্য তুলে ধরেছে। তিনি বলেছেন, এক দিকে ডলারের তুলনায় পাক রুপির দাম কমেছে। অন্যদিকে জীবনদায়ী ওষুধের দামও বেড়ে গিয়েছে। ড্রাগ রেগুলেটরি অথোরিটির নির্ধারিত দামে ওই ওষুধগুলি আমদানি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
চূড়ান্ত অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে পাকিস্তান। বিদেশি ঋণের বোঝা রীতিমতো কাবু করে দিয়েছে দেশটিকে। গত বছর বন্যার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছিল তারা। তার উপর এখন ডলারের তুলনায় পাক রুপির মূল্যের পতন দেখা দিয়েছে। এর ফলে ঋণে জর্জরিত পাকিস্তানে জীবনদায়ী ওষুধ মেলাও ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে আমদানিকৃত ভ্যাকসিন, ক্যানসারের ওষুধ এবং অন্যান্য ওষুধের ব্যাপক ঘাটতি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের বেশিরভাগ ওষুধই স্থানীয় ভাবে তৈরি হয়। কিন্তু এগুলি উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল আসে বিদেশ থেকে। কিন্তু বর্তমানে বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার তলানিতে চলে গিয়েছে। একইসঙ্গে ডলারের সঙ্গে পাক রুপির মূল্যের এতটা ব্যবধান তৈরি হওয়ায় সেগুলি আমদানি করতে পারছে না পাকিস্তান। ফলে বহু ওষুধেরই উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন আমজনতা। পাকিস্তানের বেশিরভাগ ওষুধই ভারত, চিন, রাশিয়া, ইউরোপের দেশ, আমেরিকা এবং তুরস্ক থেকে আমদানি করা হয়।