জুনিয়র চিকিৎসকরা আর করতে পারবেন না ‘এই’ কাজ! নয়া নির্দেশিকা জারি হতেই শোরগোল

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে উত্তাল রাজ্য। সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে (Medinipur Medical College) একই দিনে সিজার হওয়া ৫ জন প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে একজন, মামনি রুইদাসের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পরেই জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior Doctors) নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে নয়া নির্দেশিকা।

জুনিয়র চিকিৎসকরা আর করতে পারবেন না ‘এই’ কাজ (Medinipur Medical College)!

ইতিমধ্যেই স্যালাইন কাণ্ডের জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি। জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে উচ্চ আদালতে। এবার জানা গেল, জুনিয়র চিকিৎসকরা আর ওটি রুমে প্রবেশ করতে পারবেন না। অ্যানাস্থেশিয়া, সার্জারির কোনও প্রক্রিয়াতেই আর পিজিটিরা যুক্ত থাকতে পারবেন না। সম্প্রতি এই নির্দেশিকা জারি করেছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী।

জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের (Medinipur Medical College) জেনারেল সার্জারি, স্ত্রীরোগ, অপথ্যালমোলজি, অর্থোপেডিক, ইএনটি বিভাগের প্রধানদের এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন অধ্যক্ষ। বলা হয়েছে, নির্দেশ অমান্য করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। অর্থাৎ এবার থেকে সিনিয়ার চিকিৎসক ও এসআরদেরই অস্ত্রোপচার করতে হবে। এদিকে এই নির্দেশিকা জারি হতেই মাথাচাড়া দিয়েছে নানান প্রশ্ন। শুধুমাত্র যদি সিনিয়র চিকিৎসকরাই অস্ত্রোপচার করেন, তাহলে স্বাস্থ্যভবন কুলিয়ে উঠতে পারবে তো? প্রত্যেকদিন রাজ্যের বুকে যত ডেলিভারি সহ অন্যান্য অস্ত্রোপচার হয়, সেখানে যদি জুনিয়র চিকিৎসকরা হাত না লাগান তাহলে সবটা সম্ভব হবে?

আরও পড়ুনঃ বিপাকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ! হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট, কোন মামলায়

এদিকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের (Medinipur Medical College) ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য দফতরের ৩টি প্রোটোকল অমান্য হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সর্বদা একজন সিনিয়র ডাক্তারের উপস্থিতিতেই অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে এই ঘটনায় ট্রেইনি ডাক্তাররাই বিষয়টি সামলেছেন। আমরা আগেই নির্দেশ দিয়েছিলাম, ট্রেইনি ডাক্তারদের সিনিয়র ডাক্তারদের অধীন কাজ করতে হবে। তাঁদের যথাযথ ডিউটি রস্টার মানতে হবে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এখানেও একটি গাফিলতি রয়েছে’।

Medinipur Medical College

এদিকে মুখ্যসচিব এহেন দাবি করতেই পাল্টা সরব হয়েছে জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্ট। তাদের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, তারা যেমন আশঙ্কা করেছিলেন, সেই ভাবেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনাকে চিকিৎসার গাফিলতি বলে চালানোর চেষ্টা শুরু করেছেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম (Narayan Swaroop Nigam)।

স্যালাইন কাণ্ডের (Medinipur Medical College) প্রেক্ষিতে ফের একবার স্বাস্থ্যসচিবকে তোপ দেগে জুনিয়র চিকিৎসক ফ্রন্ট দাবি করেছে, ‘যার তত্ত্বাবধানে অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, অধ্যাপক, জুনিয়র চিকিৎসক, গ্রুপ ডি স্টাফ, টেকনোলজিস্ট নিয়োগই করা হচ্ছে না। যার বদান্যতায় অধিকাংশ জীবনদায়ী চিকিৎসার জন্য গোটা বাংলা থেকে সাধারণ মানুষকে কলকাতায় ছুটে আসতে হয়। যার নজরদারিতে এখনও কালো তালিকাভুক্ত ওষুধ চালাতে বাধ্য করা হচ্ছে চিকিৎসকদের’। এরপর আরজি কর কাণ্ডের কথা উল্লেখ করে ফের একবার স্বাস্থ্যসচিব পদ থেকে নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর