মিলছিল না অঙ্ক! “মা আই কুইট” লিখে আত্মহত্যা মেধাবী স্কুলছাত্রের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: করোনার জেরে বন্ধ স্কুল। তাই বাড়িতেই আর পাঁচজনের মত চলছিল পড়াশোনা। হোয়াইট বোর্ডে রয়েছে ধাপে ধাপে কষা অঙ্ক। তবে সম্পূর্ণ হয়নি তা। সেই অঙ্কটা আর মিললও না শেষ পর্যন্ত। বরং বড় বড় করে হোয়াইট বোর্ডের মধ্যে লেখা রয়েছে “মা আই কুইট।” আর ঘরে ঝুলছে নিথর দেহ!

শিলিগুড়ির জ্যোতিনগর এলাকার বাসিন্দা সোমনাথ সাহা শিলিগুড়ি উচ্চতর বালক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। এলাকায় এবং স্কুলে যথেষ্ট মেধাবী ছাত্র বলেই পরিচিত ছিল সোমনাথ। মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল সে। স্বপ্ন ছিল পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করে পরবর্তীতে অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে পড়ার। তবে তার এই স্বপ্নের পথে বাধা পড়ল হঠাৎ!

কি করে এমন ঘটনা ঘটলো তা বুঝে উঠতে পারছেন না সাহা পরিবারের কেউই। সোমনাথের মা মঙ্গলবার থেকে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। বাবা কেঁদে চলেছেন অঝোরে। প্রাথমিকভাবে পরিবারের ধারণা, পড়াশোনা নিয়ে মানসিক অবসাদের কারণেই আত্মহত্যা করেছে সোমনাথ। যদিও দেহের ময়না তদন্তের রিপোর্টে এখনও জানা যায়নি।

এদিকে, সোমনাথের বন্ধুরা জানিয়েছে যে, সামান্য বিষয় নিয়েও খুব দুশ্চিন্তা করত সে। পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী থাকলেও অঙ্ক বা অন্য কোনো বিষয়ে পড়াশোনায় সামান্য ঘাটতি হলেই মন খারাপ হত তার।

WhatsApp Image 2022 01 27 at 5.39.37 PM

এমনকি, কোনো প্রতিযোগিতাতে হেরে গেলেও মানসিক অবসাদে ভুগত সোমনাথ। তবে আকস্মিক এই ঘটনায় হতবাক সকলেই। ময়নাতদন্তের পর বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রের দেহ বাড়িতে আসে। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। পড়াশোনা নিয়ে অত্যধিক মানসিক চাপ নাকি অন্য কোনো কারণে এমন মর্মান্তিক পরিণতি তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

এই প্রসঙ্গে সোমনাথের বাবা সুবীর সাহা জানিয়েছেন, “ছেলে সবসময় উচ্চশিক্ষা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিল। মঙ্গলবার দুপুরেও বাড়িতে সবার সঙ্গে সময় কাটায়। এরপর নিজের ঘরে পড়াশোনা করছিল সে। তারপর বিকেল নাগাদ ওর ঘরে উঁকি দিয়ে দেখি দেহ ঝুলছে। জানিনা কেন এই ঘটনা ঘটাল।” স্বভাবতই, মেধাবী ছাত্রের মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকবিহ্বল হয়ে পড়েছেন সকলেই।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর